উত্তম কুমার – বাঙালির চিরহরিৎ স্টাইল আইকন
এদেশে মডেলিংয়ের সূত্রপাত বিজ্ঞাপন জগতের হাত ধরে হলেও পূর্ণ সময়ের পেশা হিসেবে আত্মপ্রকাশ অনেকটা পরে। পঞ্চাশ-ষাটের দশকেও বিজ্ঞাপনে মূলত অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরই ব্যবহার করা হতো। র্যাম্প মডেলিংয়ের রমরমা হয়েছে আরও একটু পরে। তার আগে মূলত অভিনেতা-অভিনেত্রীরাই প্রথম সারির বিজ্ঞাপনের মডেল হতেন।
নব্বইয়ের দশকে যখন জাতীয় স্তরে মডেলিং পেশার ‘বুম’ ঘটছে, তখনও হাতে গোনা বাঙালি এসেছেন মডেলিংয়ে। সুস্মিতা সেন, নয়নিকা চট্টোপাধ্যায়রা কিন্তু বাংলা থেকে তাঁদের যাত্রা শুরু করেননি। তখনও কলকাতায় সুযোগ ছিল অনেক কম, এই পেশা অতটাও সুসংগঠিত ছিল না। কিন্তু স্টাইল স্টেটমেন্টে বাংলা বিনোদন জগৎ যে তার অনেক আগে থেকেই সমৃদ্ধ ছিল তার সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত মহানায়ক।
একটা সময় ছিল যখন বাঙালি মজেছিল ওঁর চুলের ইউ ছাঁটে। ডোরা কাটা হাফ শার্ট ও ধুতি কিংবা ধুতি-পাঞ্জাবির সুভদ্র পোশাকে, অথবা ওঁর ওঁর হাসি-বুলি-চাহনিতে। ধুতি-পাঞ্জাবি বা ধুতি-শার্ট পড়া উত্তম কুমার আবার চরিত্রের দাবিতে সুটেড-বুটেড হয়ে দস্তুরমতো সাহেবি কেতার মানুষও হয়ে উঠতেন। আর তাতেই ঘায়েল হাত আপামর বাঙালি সমাজ।
কখনো ধুতি, কখনো ট্রাউজার, কখনো স্যুট, কখনো পাঞ্জাবি আবার কখনো বা গ্রামবাংলার আটপৌরে রূপে যেন বহুরূপী। অরুণ কুমার চ্যাটার্জি থেকে জীবন-সংগ্রামে ক্রমাগত চড়াই-উতরাই পেরিয়ে উত্তম কুমার হন তিনি। আজও বিরাজমান দর্শকের হৃদয়ে।