ঘাটালে বিজেপি হারার কারণেই কি কেন্দ্রীয় বাজেটে উল্লেখ নেই ‘মাস্টার প্ল্যানে’র?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রস্তাবিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ২০২৪-২৫-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে কোনও বরাদ্দই হল না। অথচ, কেন্দ্রে বিজেপি যদি ক্ষমতায় ফেরে, তাহলে প্রথম বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য টাকা বরাদ্দের ভোটের প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী থেকে ঘাটালের পদ্ম প্রার্থীর মুখেও।
মঙ্গলবার এই এনডিএ সরকারের প্রথম সাধারণ বাজেটে ঘাটালের ওই প্রকল্পে কোনও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ঘাটালবাসী।
সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে টানা তিন মাস ধরে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে টাকা বরাদ্দ নিয়ে হইচই হয়েছিল। ঘাটালকে বন্যা থেকে বাঁচাতে ওই প্রকল্প রাজ্য সরকার একাই করবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন ঘোষণার পরেও প্রকল্পটিকে হাতিয়ার করেছিল পদ্ম শিবির।
বিজেপির ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় ঘোষের দাবি করেছেন যে, ভোটের সময় দলীয় প্রস্তাবনায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ও রেলপথ দুটিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। ঘাটালে বিজেপির সাংসদ হলেই এ বারই টাকা নাকি বরাদ্দ হয়ে যেত।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ২০২৪-২৫-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে কোনও বরাদ্দ না হওয়ার পরে বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটিও।
রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া পাল্টা বলেন যে, ‘মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ভোটের আগে বড় বড় কথা বলে বাজার গরম করেছিলেন পদ্ম নেতারা। অথচ বাজেটে মাস্টার প্ল্যানে কোনও টাকা বরাদ্দ হয়নি। বন্যা মোকাবিলায় গোটা বাংলার জন্য কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। বিজেপি যে কত অসত্য ও মিথ্যা কথা বলে, ঘাটালের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। মানস আরও বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার রুপায়ণ করবে। তার পদক্ষেপও শুরু হয়েছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দীর্ঘ দিনের প্রস্তাবিত প্রকল্প। বয়স ষাট পেরিয়েছে তার। তবে এখনও এই প্রকল্প দিনের আলো দেখেনি। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পটিকে ‘ফ্ল্যাড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বর্ডার এরিয়া’ প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেয় রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সম্মতি জানায়। ওই বছরই ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স’ও দেয় কেন্দ্র। তারপর নতুন করে আর কোনও অগ্রগতি বা টাকা বরাদ্দ কিছুই হয়নি।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ঘাটালের প্রস্তাবিত মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করতে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করছে বলে খবর। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর ঘাটালের সাংসদ দেবের সঙ্গে প্রাক্তন সেচমন্ত্রীর বৈঠকও হয়েছিল। তারপরই শিলাবতীর সঙ্গে চন্দ্রেশ্বর খালের সংযুক্তির জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। ওই খালের সংযোগ মাস্টার প্ল্যানেরই অন্তর্ভুক্ত।