পোস্ট অফিসে জমানো টাকা তুলতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা গ্রাহকদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পোস্ট অফিসে জমানো টাকা তুলতে গিয়ে হাজার হাজার গ্রাহকের নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে রাজ্য জুড়ে। মাসের পর মাস আটকে আছে নিজেদেরই সঞ্চিত অর্থ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এখন ডাকঘরে টাকা রাখতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছেন অনেকে। বিয়ে, চিকিৎসা বা জরুরি কোনও কাজে যাঁদের টাকা দরকার, ডাক বিভাগের ‘সৌজন্যে’ তাঁরা এখন ডুবতে বসেছেন!
দক্ষিণ শহরতলির এক পোস্ট অফিস থেকে কিষান বিকাশপত্র কিনেছিলেন নারায়ণ দাস। মেয়াদ শেষে তিনি সঞ্চয় প্রকল্পের নথি নিয়ে পোস্টাল এজেন্ট মারফত ডাকঘরে যোগাযোগ করেন। তাঁকে পত্রপাঠ জানিয়ে দেওয়া হয়, টাকা পাওয়া যাবে না! কিন্তু কেন? ডাক বিভাগের ‘অভ্যন্তরীণ’ কিছু সমস্যা চলছে। তাই অপেক্ষা করতে হবে। কতদিনের অপেক্ষা? পোস্ট অফিসের কর্তাদের জবাব, ‘দু’মাসও লাগতে পারে, তিন মাসও পেরতে পারে। কবে হবে, কেউ জানে না!’ একথা শুনে নারায়ণবাবু যখন কার্যত হতভম্ব, তাঁর দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিলেন তাঁরই পোস্টাল এজেন্ট। তিনি জানালেন, তাঁর পরিচিত এক গ্রাহক গত বছর পুজোর সময় ১০ বছর মেয়াদের একটি ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট (এনএসসি) জমা করেছিলেন। তার টাকা এখনও পাননি।
যোগাযোগ ভবন সূত্রে খবর, ২০১৫ সাল নাগাদ ডাকঘরগুলিতে কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বা সিবিএস চালু হয়। দীর্ঘদিন ধরে ধাপে ধাপে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সেই সময় যাঁরা সঞ্চয় প্রকল্প কিনেছিলেন, তাঁদের নথি সহ যাবতীয় তথ্য সিবিএস ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করার ভার ছিল ডাককর্মীদের উপর। পোস্ট অফিসের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘মাইগ্রেশন’। বহু ক্ষেত্রে সেই কাজ হয়নি। ফলে নরেন্দ্র মোদীর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’য় ডিজিটাল ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গিয়েছে বহু সঞ্চয় প্রকল্পের নথি। সেই গ্রাহকদের ক্ষেত্রে সমস্যা প্রকট হয়েছে, যাঁরা ওই সময় ১০ বছরের এনএসসি বা কিষাণ বিকাশপত্র কিনেছিলেন। পর্যাপ্ত নথি সরবরাহ না হওয়ায় তাঁদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।