প্রকৃতির রোষে তছনছ ওয়েনাডের মেপ্পাড়ি, মৃত বেড়ে ১৫৬
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: প্রকৃতির রোষে তছনছ হয়ে গিয়েছে ওয়েনাডের মেপ্পাড়ি! ছবির মতো সাজানো কেরলের এই গ্রাম মাত্র চারঘণ্টায় শেষ হয়ে গেল। মঙ্গলবার গোটা গ্রাম কাদামাটির নীচে। জল-মাটির তোড়ে গড়িয়ে আসা পাথরের খাঁজে খাঁজে আটকে রয়েছে মৃতদেহ। মৃতের সংখ্যা শতাধিক। এখনও কয়েকশো মানুষ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শেষ পাওয়া খবর মৃতের সংখ্যা ১৫৬। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন।কেরলে কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ওয়েনাডের পাদিনজারাথারায় মঙ্গলবার ভোর অবধি, ২৪ ঘণ্টায় ২৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির জেরেই পাহাড়ি এলাকায় এই বিপর্যয়। রাত দু’টো নাগাদ মেপ্পাড়ি এলাকায় প্রথম ধস নামে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গোটা গ্রাম। ভেসে যায় একাধিক বাড়ি। পাথরে চাপা পড়েন বহু মানুষ। আড়াই ঘণ্টা পর দ্বিতীয় ধসে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় গোটা গ্রাম। তারপর মুন্ডাক্কাই, চূড়ালমাল, আট্টামালা ও নুলপুঝা গ্রাম থেকে পরপর ধসের খবর আসতে থাকে। প্রবল বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ শুরু করতেই দেরি হয়ে যায়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। মৃতদের মধ্যে বহু মহিলা, শিশুরাও রয়েছে। কাদা ও নদীর জলের স্রোতে বহু দেহাংশও ভেসে এসেছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩৪টি দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। ১৮টি মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেনা, নৌসেনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ করছে। বায়ুসেনার হেলিকপ্টারকেও কাজে লাগানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
কেরলের কোঝিকোড় জেলাও বিপর্যস্ত। ভিলাঙ্গাড়ু, মালায়নগাড়ুর মতো পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসে বেশ কিছু বাড়ি, রাস্তা ও সেতু নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ওয়েনাড, কোঝিকোড়-সহ কেরলের আট জেলায় ভারী বৃষ্টির ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহতরা পাবেন ৫০ হাজার টাকা।