“পুলিশ কী করেনি!” সংবাদমাধ্যমের প্ররোচনামূলক ভুয়ো খবরকে কাঠগড়ায় তুললেন ক্ষুব্ধ কমিশনার
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: মেয়েদের রাত দখল কর্মসূচি চলাকালীন বুধবার গভীর রাতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তাণ্ডবের অভিযোগ সামনে আসে। পুলিশের উপরেও আক্রমণ চলে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন গুজব প্রসঙ্গে বিনীত গোয়েল বলেন, “আমি ক্রুদ্ধ। ডিসি নর্থ প্রতিবাদীদের রক্ষা করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন। এখানে যা হয়েছে তা ভুল প্রচারের জন্য হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কলকাতা পুলিশ কী করেনি! আরজি করের ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ সব কিছু করেছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি; আমার সহকর্মীরা দিন-রাত এক করে দিয়ে এই তদন্তের কিনারা করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা প্রমাণ সংগ্রহে কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নানা রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও ‘মহাপাত্র’-এর নাম হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ‘মহাপাত্র’-এর রাজনৈতিক যোগ রয়েছে এবং তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত! যাঁর নামে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে তিনি এক জন ইন্টার্ন। খুব ছোট জায়গা থেকে তিনি উঠে এসেছেন। আমরা সেটি খতিয়ে দেখেছি। তাঁর বাবা এক জন প্রাথমিক শিক্ষক। তাঁর রাজনৈতিক কোনও যোগ নেই। সাধারণ মানুষ এই গুজব ছড়িয়েছেন। এদের মধ্যে ওঁর নিজের বন্ধুরাও রয়েছেন। যা কি না আরও মর্মান্তিক। আমি ক্রুদ্ধ। যা হয়েছে তার জন্য আমি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ। আমরা কোনও ভুল করিনি। নানা ভুল প্রচারে কলকাতা পুলিশের সম্মানহানি ঘটেছে। মানুষ আমাদের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।”
কমিশনার বলেন, তাঁরা কখনই বলেননি যে আরজি করের ঘটনায় এক জন জড়িত। তিনি জানান, তাঁরা বিজ্ঞানসম্মতভাবে পাওয়া তথ্যের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যার জন্য সময় লাগত। অভিযুক্ত বার বার বয়ান পরিবর্তন করছিল। অকাট্য প্রমাণ ছিল না। কোনও গুজবের ভিত্তিতে কোনও পিজি ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা যায় না। নানাবিধভাবে উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। প্রথম থেকেই পুলিশ স্বচ্ছ ছিল। যা যা করা প্রয়োজন ছিল তাই-ই করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্ত সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। সিবিআই এখন তদন্ত করছে। সবরকমভাবে তাদের সাহায্য করবে পুলিশ। পুলিশ প্রথম থেকেই স্বচ্ছভাবে তদন্ত করে আসছে।
তাঁর কথায়, “মৃতার দেহ নিয়েও নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে, যার কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা ছিল না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারও চালানো হয়েছে। যা কি-না শহরের জন্য দুর্ভাগ্যজনক এবং দুঃখজনক। এর ফলে কলকাতা পুলিশের সম্মানহানি হয়েছে। ভ্রান্তিমূলক প্রচার থেকে বিরত থাকলেই এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি আমরা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করিনি। যদি সিবিআই প্রমাণ করতে পারে আমরা প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছি তাহলে ২০১ ধারা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।”