ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি টাকা ঘুরপথে বাইরে নিয়ে গিয়েছেন সন্দীপ ঘোষ? তদন্ত শুরু করেছে সিট
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে টালা থানায় কেস রুজু করেছে লালবাজার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি সরকারি টাকা ঘুরপথে বাইরে নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তৎপর রাজ্যের গঠিত সিট। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন এবং সেখানে কত টাকা ঢুকেছে তার বিশ্লেষণ চলছে। এই অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির কাছে চিঠি পাঠাচ্ছে তারা। পাশাপাশি নামে-বেনামে সন্দীপের কোনও সম্পত্তি রয়েছে কি না, সেটাও লালবাজারের নজরে। প্রশাসনিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্দীপ বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ এসেছে নবান্নের নজরেও। যা কোনও ভাবেই মেনে নেবে না শীর্ষ মহল। ফলে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, দ্রুত কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে চায়। সেই কারণেই এক মাসের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে এই বিশেষ দলকে।
সূত্রের খবর, ২০২৩ সালে সন্দীপের বিরুদ্ধে তৎকালীন হাসপাতালের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট আখতার আলির একগুচ্ছ অভিযোগ এসেছে তদন্তকারীদের নজরে। স্বাস্থ্য দপ্তর ছাড়াও স্টেট ভিজিলেন্স কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন আলি। জানা গিয়েছে, একটি প্রকল্পের মোট অঙ্ক ভাগ করে ছোট ছোট করে এক লক্ষ টাকার মধ্যে নিয়ে এসে ই-টেন্ডার এড়িয়ে পেটোয়া লোকদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আবার, ভেন্ডরদের থেকে ২০ শতাংশ হারে কমিশন নেওয়া থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এবং সম্ভব পূর্ত দপ্তরকে এড়িয়েই হাসপাতালের ভিতরে যত্রতত্র ক্যান্টিন, শৌচাগারের মতো পরিকাঠামোর বেআইনি নির্মাণ সন্দীপের অঙ্গুলিহেলনে হতো বলেও অভিযোগ।
হাসপাতালের অ্যাকাউন্ট অফিসারের বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করে, পছন্দর লোককে টাকা পাইয়ে দিতে চাপ দিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকী চিকিৎসকদের বদলির হুমকি দিয়ে তোলা আদায় করা হতো বলেও অভিযোগ। টাকার বিনিময়ে চলত অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের র্যাকেট। যা নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীর মাধ্যমে বায়ো-মেডিকেল ওয়েস্ট বাইরে বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আকাদেমি ফান্ডের টাকার পাশাপাশি কোভিড ফান্ড ব্যবহার করে বিলাসবহুল অফিস তৈরি সহ অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় খরচের অভিযোগও তাঁর বিরুদ্ধে আছে বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, যদি সন্দীপের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ প্রমানিত হয়, সেই ক্ষেত্রে তাঁর একার পক্ষে নয়ছয় করা কী সম্ভব? সেই ক্ষেত্রে তদন্ত শেষে নতুন কারও নাম উঠে আসে কি না, সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের।