আন্দোলনের নামে রাজনীতি, উৎসবের আমেজে প্রতিবাদ দেখে আম জনতা হতাশা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পোস্টারে লেখা ‘নৃশিংষ’, বোঝা যাচ্ছে নৃশংস লেখার চেষ্টা হয়েছে। নাচ, গান, মঞ্চে হাসাহাসি, আদপে প্রতিবাদ হচ্ছে না উৎসব বোঝার উপায় নেই! মঞ্চ আলো করে বসে আছেন বিজেপির ছোট-বড়-মেজো-সেজো নেতানেত্রীরা। মঞ্চের নীচে হাতেগোনা লোকজন ছবি, সেলফি তুলছেন কেউ কেউ। কেউ আবার মধ্যাহ্নভোজের লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। ঢালাও ভোজসভার আয়োজন। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে শ্যামবাজারে বিজেপির অবস্থান মঞ্চের চিত্রটা ছিল এমনই। উৎসবের মেজাজ চারিদিকে। ছাত্র-নাগরিক সমাজ যেভাবো পথে নেমেছিল, সেই ছবি উধাও। আন্দোলনের দখল নিয়েছে রাজনীতি। বিরক্ত আম জনতা। ‘ছাত্রদের আন্দোলনে কেন রাজনীতির নোংরা খেলা?’ হতাশা ঝরে পড়ছে বাঙালির গলায়।
শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণমুখী রাস্তা বন্ধ। আরজি কর ব্রিজ থেকে বাস, গাড়ি বাঁদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আম জনতার সাফ কথা, এভাবে বিচার পাওয়া যায়? রাজনীতি করছে ওরা। আম জনতার পেটেই লাথি মারা হচ্ছে। ছাত্রদের আন্দোলনে সমর্থন আছে। কিন্তু ওরা এসব কী শুরু করেছে? স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, দলগুলো রাজনীতি করতে নেমেছে। এইসব নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। রাজনীতি ঢুকে গেলে সব ওলটপালট হয়ে যায়। আন্দোলনের জেরে শ্যামবাজার সংলগ্ন ছোট দোকানিদের পেটেও লাথি পড়েছে। শ্রমজীবী মানুষদের বক্তব্য, এবার এসব বন্ধ হোক। আরজি করের আশপাশে থাকা দোকানগুলোর ব্যবসা কার্যত শূন্য এসে ঠেকেছে আন্দোলনের জেরে। ৯০% ব্যবসায়ীরা চাইছেন এবার বন্ধ হোক। বিচার দেওয়া আদালতের কাজ।
বিক্ষোভ মঞ্চের পিছনে বিশালাকার এলইডি। সেখানে ফুটে উঠছে বৃহস্পতিবারের স্বাস্থ্যভবন ঘেরাও অভিযান কর্মসূচি, বিভিন্ন দাবি, স্লোগান। চারদিকে তাঁবু খাটানো। পাশের গলিতে লাইন দিয়ে চলছে মাছ-ভাত-ডাল-তরকারি খাওয়া। শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণগামী এই রাস্তা জুড়ে শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিক্রি। দুপুর থেকে মঞ্চে হাজির সুকান্ত মজুমদার, অগ্নিমিত্রা পাল, লকেট চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ ঘোষ সহ আরও অনেকে। মঞ্চ ঘিরে শুধুই গাড়ির মেলা আর নেতাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন আধাসেনার ভিড়। ছোট হয়ে এসেছে ফুটপাত। কর্পোরেট প্রতিবাদ কাকে বলে! দেখছে বাংলা।