বিজেপি শাসিত অসমে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শামিল গোটা রাজ্য
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শামিল হয়েছে গোটা রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছিলেন, পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে বের করে চরম শাস্তির ব্যবস্থা করবে। শনিবার ভোরে দেখা গেল গণধর্ষণের ঘটনায় ধৃত একমাত্র অভিযুক্ত পুলিশের ঘেরাটোপে থাকাকালে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয়। ঘণ্টা দুই তল্লাশির পর তার মৃতদের উদ্ধার করে পুলিশ।
নগাঁও জেলার ঢিং এলাকায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল তিনজনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই কিশোরীকে রাস্তার ধারে অর্ধনগ্ন ও অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। তাঁরাই পুলিসকে খবর দেন। পুলিস এসে মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে প্রবল বিক্ষোভ দেখান সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠনগুলি। স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়ে ব্যবসায়ীরাও এদিন দোকানপাট বন্ধ রাখেন। সকলেরই দাবি এক, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।
এক সন্দেহভাজনকে আটক করে। পুলিশের বক্তব্য, তারা ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ধৃতকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ঘটনার পুননির্মাণ করা। তখনই পুলিশের হাত ছিঁটকে ধৃত লাগোয়া পুকুরে ঝাঁপ দেয়। সেখানেই ডুবে মারা যায় সে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, অপধারী নিজেই ঝাঁপ দেয়, নাকি পুলিশই তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। কোনও প্রভাবশালী অপরাধী বা তাদের পরিচিত কাউতে বাঁচাতে প্রমাণ লোপাটে এমনটা করা হয়েছে কি না আলোচনায় এসেছে সেই প্রশ্নও।
এদিকে বিষয়টিতে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এদিন হাইলাকান্দির এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢিং এলাকায় ওই হিন্দু কিশোরীর উপর এই ভয়াবহ নির্যাতন যারা চালিয়েছে, তাদের রেয়াত করা হবে না। আমি নিজে ডিজিপি এবং জলসম্পদমন্ত্রীকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত তদন্ত করতে বলেছি।’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, লোকসভা ভোটের পর একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের কিছু লোক খুবই সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এই ধরনের অপরাধ ঘটাচ্ছে। গত দু’মাসে এনিয়ে ২৩টি নারী নির্যাতনের ঘটনা সেটাই প্রমাণ করছে বলে জানান হিমন্ত। এখানেই অবশ্য থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। আরও একধাপ সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘লোয়ার ও সেন্ট্রাল অসম এবং বরাক উপত্যাকার জেলাগুলিতে রাজ্যে আদি বাসিন্দারাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। তাঁরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বাইরের মানুষের পক্ষে এই কঠিন বাস্তব উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। আমরা আসল অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে। শুধু হিন্দুদের দোষারোপ করাতেই আমাদের আটকে পড়া উচিত নয়।’