দোষীদের শাস্তি দরকার কিন্তু রোগীরা হাসপাতালে পরিষেবা না পেলে কোথায় যাবে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুক্রবার আর জি কর হাসপাতালে ১১০০’র বেশি রোগী ওপিডিতে দেখিয়েছেন, খবর এমনটাই। গত সপ্তাহে ঝামেলার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেননি নিউটাউনের শেখ হুসেন আলি। বাইরে থেকেই ইনসুলিন আর সুগারের ওষুধ কিনেছিলেন। একবার কষ্ট করে কিনেছেন, বারবার তো সম্ভব নয়। বলছিলেন, ‘ডাক্তার দেখেছে। ওষুধ এখান থেকেই নিতে পেরেছি।’ তারপরেই বিরক্তির সঙ্গে বললেন, ‘গোটাটা রাজনীতি… বুঝলেন? মেয়েটার জন্য বিচার দরকার। এখানেও রাজনীতি। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হচ্ছে, আর আমাদের প্রাণ যাচ্ছে।’
বেলা বাড়তেই তুমুল বৃষ্টি। না হলে হয়তো মরিয়া হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ত। ওপিডির সামনের রাস্তায় ভালো রকম জল জমেছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও ভারী জুতো হাতে নিয়ে জল পেরচ্ছিলেন। নিউটাউনের ওই বাসিন্দাও সেই পথে জল পেরিয়ে ওপিডিতে এসেছেন। ডাক্তার যে দেখাতে পেরেছেন, এতেই খুশি। ওপিডিতে এদিন যাঁরাই ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের। সকলেরই বক্তব্য, ‘কতদিন বাইরে থেকে ওষুধ কিনব?’ হাতে প্লাস্টার বেঁধে এসেছিলেন আসাদুল হক। তারিখ হিসেব কষে বললেন, ‘১৪ তারিখ আসতে বলেছিল। সেদিন ঝামেলার খবর পেয়ে আসিনি। তারপর ২১ তারিখ এলাম। ফিরে গেলাম। আজ অবশেষে ডাক্তার দেখেছেন।’
আসাদুল বলছিলেন, ‘যা হয়েছে, মর্মান্তিক। দোষীদের শাস্তি দরকার। কিন্তু আমরা পরিষেবা না পেলে কোথায় যাব বলতে পারেন? আমাদের তো বেসরকারি জায়গায় দেখানোর ক্ষমতাও নেই।’ বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে বেরলেন বসিরহাটের স্বদেশ বিশ্বাস। বললেন, ‘বাবার কিডনির সমস্যা। আমাদের আজকেই তারিখ ছিল। ডাক্তার দেখেছেন’। তিনি আরও বলেন, ‘বিভাগে ডাক্তারবাবুর সংখ্যা কম। আমার মনে হয়, দোষীদের শাস্তি পাওয়া দরকার। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে তো মানুষ মরে যাবে!’