গ্যাস, জ্বর, সর্দি-কাশির ১৫৬টি ওষুধ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র, কোন কারণে এই সিদ্ধান্ত?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কোনও সুস্থ বৈজ্ঞানিক যুক্তি ছাড়াই একটির সঙ্গে আর একটি উপাদান যুক্ত করে বাজার থেকে দেদার মুনাফা লোটা চলছে! আর এই প্রবণতার ঠেলায় শুধু যে রোগীদের পকেট গড়ের মাঠ হচ্ছে তা নয়, শরীরস্বাস্থ্যেরও বাজছে বারোটা। এমন ১৫৬টি কম্বিনেশন ওষুধকে এবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সার ও ওষুধ মন্ত্রকের আওতাধীন ওষুধ দপ্তর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে জ্বর-জ্বালা, পেট ব্যথা, গ্যাস, বমি, হাঁচি-কাশি, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি ফাঙ্গাল নানা ট্যাবলেট, সিরাপ ও ইনজেকশন!
‘ফিক্সজড ডোজ কম্বিনেশন’ বা ‘এফডিসি’ নামের এই সব ওষুধে একসঙ্গে ২ থেকে ১৩ ধরনের উপাদান নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে ছাড়া হয়েছে বাজারে। বিভিন্ন ওষুধ নির্মাতা সংস্থা এব্যাপারে এক বা একাধিক গবেষণাপত্রকে ঢাল করে আসছে। সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতেই এইসব ওষুধ মেশানো হয়েছে বলে তাদের দাবি। এই দাবির সত্যতা কতটা? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও ওষুধবিজ্ঞান বা ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ডাঃ অঞ্জন অধিকারী এব্যাপারে কেন্দ্রের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এইসব ওষুধগুলি বাজারে থাকাই বিপদজনক। কারণ, এইসব কম্বিনেশনের পিছনে কোনও সুসংহত বিজ্ঞানম্মত যুক্তিই নেই।’
কেন এইসব কম্বিনেশনকে ‘যুক্তিহীন’ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা? তাঁরা জানান, এই নিষিদ্ধ তালিকার সর্বাগ্রেই আছে ১৩টি ওষুধের একটি ফিক্সডজ ডোজ কম্বিনেশন। সেগুলির অধিকাংশই এনজাইম বা উৎসেচক। এগুলি ভারতে বিভিন্ন হজমের ওষুধ হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু এতগুলি উৎসেচকের কম্বিনেশন পাকস্থলীতে গেলে শুধু কর্মক্ষমতাই হারায় না, মানুষের ক্ষতিও করতে থাকে। যেমন, তালিকার ১৬ নম্বরে রয়েছে সুক্রালফেট এবং অ্যাসিক্লোফেনাকের কম্বিনেশন। সুক্রালফেট গ্যাসট্রিক আলসারের রোগীদের ক্ষেত্রে পেটে একটি স্তর তৈরি করে দেয়। তাতে ক্ষতি কম হয়। আর অ্যাসিক্লোফেনাক এক ধরনের নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটারি ড্রাগ। এই দুই কম্বিনেশনের কোনও কার্যকারিতা নেই বলে দাবি ওষুধবিজ্ঞানীদের।