অ্যাপ ক্যাব এখন মাদক পাচারের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠছে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অ্যাপ ক্যাব এখন মাদক পাচারের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। কীভাবে হচ্ছে মাদক পাচার? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অ্যাপ নির্ভর বাইক চালক বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ভিআইপি বাজার এলাকা থেকে একটি বুকিং আসে।
মোবাইলের স্ক্রিনে দেখায় ‘প্যাকেজ’ ডেলিভারি করতে হবে। তখন রাত সাড়ে আটটা বেজেছে। প্যাকেজ নিয়ে যেতে হবে সল্টলেকে। ডেলিভারির খরচ দেখাল ১৮০ টাকা। বুকিং নিলাম। রুবির কাছে ছিলাম। এরমধ্যে ফোন এল বুকিং পার্টির। ‘আপনি কতদূর?’ জানালাম, ‘মিনিট সাতেকের মধ্যে পৌঁছচ্ছি স্যার’। ভিআইপি বাজার পৌঁছে দেখলাম, কালো গেঞ্জি আর হাফ প্যান্ট পরাএক যুবক দাঁড়িয়ে। তাঁর হাতে সোনালি প্যাকেট করা ছোট গিফ্ট বক্স। তিনি ১৮০ টাকার জায়গায় ৫০০ টাকা দিলেন। শুধু বলেলেন, ‘জিনিসটা খুব সাবধানে পৌঁছে দিতে হবে।’ টাকা নিয়ে বাইক স্টার্ট করি। তবে সায়েন্স সিটি পেরতেই কেমন খচখচ করে উঠল মন। বেশি টাকা দিতে কেউ চায় না। কিন্তু ইনি কেন এক্সট্রা ৩২০ টাকা দিলেন? তারপর বাইক দাঁড় করিয়ে গিফ্ট প্যাকটি খুলতেই হাঁত কেঁপে ওঠে। প্যাকেটের ভিতরে গাঁজা ও হেরোইনের প্যাকেট।’
চালক সঙ্গে সঙ্গে বুকিং বাতিল করার জন্য গ্রাহককে ফোন করেন। তবে একটানা সুইচড অফ টোন শুনতে পান। চালকের বক্তব্য, ‘এত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে, পুলিসের কাছে যাওয়ার কথা মাথাতেই আসেনি। ফোন সুইচড অফ পেতেই বুঝে গিয়েছিলাম অ্যাপ বাইক ব্যবহার করা হয়েছে ড্রাগ ডেলিভারির জন্য। ঝামেলা এড়াতে বাক্সটি পৌঁছে দিয়েছিলাম।’ অ্যাপ বাইকচালকদের একাংশের বক্তব্য, কালিকাপুর, রুবি, ভিআইপি বাজার, পঞ্চান্নগ্রাম এলাকাগুলি থেকে প্যাকেজ ডেলিভারির বুকিংয়ের প্রবণতা বেশি। রাত বাড়লে সেই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। মাদক ‘পাচার’-এর বিষয়টি চালকদের মধ্যে চাউর হতেই অনেকেই প্যাকেজ বুকিং নিচ্ছেন না। কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, বিষয়টির তদন্ত চলছে। লালবাজারের মাদক কারবারীদের ফাঁদে ফেলতে ‘স্ক্যানার’ চালু করেছে।