BJP-র হুমকির তোয়াক্কা না করে বন্ধে দোকান খোলা রাখলেন ব্যবসায়ীরা
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ১২ ঘণ্টার বন্ধ সফল করতে বুধবার হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় কর্মীদের রাস্তায় নামিয়ে অশান্তির ছক কষেছিল বিজেপি। পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে দোকান বন্ধ রাখতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে পদ্ম পার্টি কর্মীদের। যদিও হুমকির তোয়াক্কা না-করে দিনভর দোকান খোলা রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। হাওড়া স্টেশন থেকে শহরের রাস্তাঘাট, কোর্ট চত্বর, বিজেপি বন্ধকে বুড়ো আঙুল দেখাল সাধারণ মানুষ।
সকাল ১০টা নাগাদ হাওড়া ময়দান এলাকায় বন্ধের সমর্থনে মিছিলের উদ্যোগ শুরু করেছিল বিজেপি। পঞ্চাননতলায় বিজেপি কর্মীরা বিভিন্ন দোকানে ঢুকে ঝাঁপ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। বিক্রেতারা দোকান বন্ধ করতে আপত্তি জানান, তাঁদের সঙ্গে বচসা বাধে বিজেপি কর্মীদের। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা বিক্রেতাদের পক্ষ নেন। দু’পক্ষের মধ্যে প্রায় হাতাহাতির অবস্থা তৈরি হয়। এরপরেই ঘটনাস্থলে আসে হাওড়া সিটি পুলিশের বিশাল বাহিনী ও র্যাফ। জোর করে রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ১৫ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে হাওড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
হাওড়া স্টেশনের কাছে গোলমোহর স্টেডিয়ামের বাইরেও জোর করে দোকান বন্ধ করার চেষ্টা করেন জনাকয়েক বিজেপি কর্মী। বিক্রেতাদের রীতিমতো শাসানি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান বিজেপির কর্মীরা। দলীয় পতাকা হাতে রাস্তার মাঝে বসে পড়ে স্লোগান দিতে শুরু করলে জমায়েত সরিয়ে দেয় পুলিশ। আনন্দ শোনকর নামের বিজেপির স্থানীয় এক মণ্ডল সভাপতিকে আটক করে হাওড়া থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সকালের দিকে রামরাজাতলা স্টেশনে গিয়ে কয়েকজন বিজেপি কর্মী, সমর্থক রেললাইনের মাঝে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মিনিট দশেকের মধ্যেই তাঁদের হঠিয়ে দেয় রেল পুলিশ।
সাঁতরাগাছি, বেলেপোল, ফোরশোর রোডের বিভিন্ন দোকানের ব্যবসায়ীরা ক্ষোভের সুরে বলেন, মঙ্গলবার ছাত্র আন্দোলনের নামে যেভাবে তাণ্ডব চলেছে, তাতে দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। তারপর বন্ধের ডাক দেওয়া হল। ব্যবসার ক্ষতি করে দোকান বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তবে বিজেপির ডাকা বন্ধ যে সফল হল না, তার নেপথ্যে ছিল সাধারণ মানুষই। অন্যান্য দিনের মতোই হাওড়া স্টেশনে দেখা গিয়েছে নিত্যযাত্রীদের ভিড়। কলকাতা সহ বিভিন্ন রুটের বাসগুলি ছিল ভিড়ে ঠাসা। মেট্রো স্টেশনেও দেখা গিয়েছে স্বাভাবিক ছবি। হাওড়া স্টেশনের বাইরে ক্যাব বুক করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অনেকেই। হাওড়া আদালতে অন্যান্য দিনের মতোই কাজে আসেন আইনজীবী, ল ক্লার্ক, মক্কেলরা। মামলার সমস্ত কাজই হয়েছে।