সাবিরের পর মোতি আলি, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যে ফের পিটিয়ে খুন বাঙালি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অপারেশন করেও শেষ রক্ষা হল না, সহকর্মীদের নৃশংস মারধরে প্রাণ হারালেন বাংলার হরিশ্চন্দ্রপুরের অভিবাসী শ্রমিক মোতি আলি। ঘটনাটি ঘটেছে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজস্থানের জয়পুরে। বাংলার আরও এক শ্রমিক পদ্মপার্টির হরিয়ানায় গোরক্ষকদের হাতে খুন হন কয়েকদিন আগেই। তাঁদের মর্মান্তিক মৃত্যুর বিচার চেয়ে কেউ শব্দ করছেন না কেন? প্রশ্ন পরিবারের।
মঙ্গলবার রাতে স্ত্রী রৌশনা বিবিকে ভিডিও কল করার সময় হাত দিয়ে কপাল ঢেকে রেখেছিলেন মোতি। টিফিন বাক্সের আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছিলেন। রৌশনা ফের ফোন করলে অন্যজন ফোন ধরেন। তাঁর হাত থেকে ফোন নিয়ে মোতি বলেন, “আমার পেটে প্রচণ্ড ব্যথা। আজকেই পেটটা ফেটে যাবে।”
রৌশনা জানান, স্বামীর কয়েকজন সহকর্মী ওঁকে মারধর করেছে। ওরা বিহার এবং ওড়িশা বাসিন্দা। মারের চোটে নাড়িভুঁড়ি সব জড়িয়ে গিয়েছিল। মলদ্বার ফাটিয়ে দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার করা হলেও, বাঁচল না। জয়পুরের মির্জা ইসমাইল রোডের এক সোনার দোকানে প্রায় ২০ বছর কাজ করতেন মোতি। তাঁকে মালিক বেশি ভালোবাসতেন বলে বাকিদের হয়ত ঈর্ষা হত। সামান্য ছুতোয় বেদম মার জুটত তাঁর।
মোতির খুড়তুতো ভাই সাবির আলি জানায় ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাঁর দাদা ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মী দোকানের লাগোয়া ঘরে একসঙ্গে খেতে বসেছিল। তখন কোনও কারণে কথা কাটাকাটি হয়। তখন সহকর্মীরা জোরে জোরে ওর পেটে লাথি মারে। তাঁর দাদা শুধু নীতিন নামটাই বলতে পেরেছিলেন। স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মালিক চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালেই মারা যান মোতি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অসহায় রৌশনার পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের দুই প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন ও সাবিনা ইয়াসমিন এবং বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি। শনিবার তাঁরা মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী তাজমুল বলেন, রাজ্য সরকার অসহায় পরিবারের পাশে আছে।
বাংলার দুই পরিযায়ী শ্রমিকের এহেন পরিণতিতে কেন ‘জাস্টিস’ চাইছেন না মানুষ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মোতির পরিবারের সদস্যরা।