চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে জঙ্গলমহলের মানুষের ভরসার জায়গা বাঁকুড়া মেডিক্যালে কমছে রোগী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রাজ্যের অন্যতম প্রান্তিক দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বহু মানুষ বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। লাগোয়া ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের অনেকেও আত্মীয় বাড়িতে থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসা করান। গত ১০ বছরে এই হাসপাতালে উন্নতমানের যন্ত্র বসানো হয়েছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকও রয়েছেন। ফলে জটিল অস্ত্রোপচার থেকে দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের আর কথায় কথায় কলকাতায় ছুটতে হয় না।
এহেন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আর জি কর কাণ্ডের পর রাজ্যের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজগুলির সঙ্গে বাঁকুড়া সম্মিলনীতেও জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি শুরু করেন। তখন আউটডোর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এখনও আউটডোরের চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত খুঁড়িয়ে চলছে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে চার হাজার রোগী ওই বিভাগে চিকিৎসা করাচ্ছেন বলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। কর্তৃপক্ষের হিসেবেই গত এক মাসে লক্ষাধিক রোগী অন্যত্র চিকিৎসা করাতে বাধ্য হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলেই মানুষ আশা করছে।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, আমাদের হাসপাতালের আউটডোরে আগে গড়ে দৈনিক সাত হাজার রোগী চিকিৎসা করাতেন। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার রোগী চিকিৎসা করাচ্ছেন। ইন্ডোরে আগে ১১০০ রোগী ভর্তি থাকতেন। বর্তমানে সেখানে ৯০০ রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জরুরি অপারেশনগুলি বর্তমানে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগের মতো জুনিয়র ডাক্তাররা আর পুরোপুরি কর্মবিরতি করছেন না। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আন্দোলনের পাশাপাশি চিকিৎসাও করছেন। তবে তাঁদের কেউ ডিউটি রোস্টারে নাম নথিভুক্ত করতে চাইছেন না। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, প্রতিদিন ইন্ডোর ও আউটডোরে পরিষেবা দেওয়ার জন্য ৮০০ চিকিৎসক কাজ করেন। তারমধ্যে প্রায় ৬০০ জুনিয়র ডাক্তার রয়েছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রায় কেউই সেভাবে নিয়মিত কাজ করছেন না। ফলে শ’দুয়েক সিনিয়র চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আধিকারিকরা উভয় সঙ্কটে পড়েছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে গেলে হাসপাতাল অচল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার সরকারের মনোভাব বুঝেও আমাদের চলতে হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরলে আমাদের গা থেকে জ্বর নামবে।