শরৎকাল পড়তেই শিব-দুর্গা সেজে শহর থেকে গ্রামে ঘুরছেন বহুরূপীরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: একটা সময় বহুরূপীরাও জড়িয়েছিলেন বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে। মানুষের বিনোদনের এই সংস্কৃতি ছিল খুবই জনপ্রিয়। তবে এখন নানা বিনোদনের চাপে কোণঠাসা বহুরূপীরা। তা সত্ত্বেও বাঙালি সংস্কৃতির এই ধারাকে বজায় রাখার চেষ্টা করে চলেছেন বীরভূমের বিষয়পুরের বাসিন্দারা।
শরৎকাল পড়তেই তাঁরা কেউ শিব, কেউ পার্বতী সেজে, আবার কেউ রাধা-কৃষ্ণ সেজে বেরিয়ে পড়েছেন। সকালে সাঁইথিয়া থেকে ট্রেন ধরে তাঁদের অনেকেই চলে আসছেন রামপুরহাটে। বয়স ১২ থেকে ১৪ এর মধ্যে। তারপর শহরের বিভিন্ন দোকানে, অলিগলি, পাড়ায় ঢুকে অন্যদের আনন্দ দিচ্ছে। এই মুহূর্তে সর্বত্রই মা দুর্গার প্রতিমা ও মণ্ডপ গড়ে তোলার কাজ চলছে। শিশুরা এখন সবাই মণ্ডপমুখী। বহুরূপীর দল দেখে তারা দৌড়ে চলে আসছে। বহুরূপীরা মানুষের কাছে বার্তা দিচ্ছে, মা আসছেন। সবাই আনন্দ করব। কিছু দাও।
এদের মধ্যে কেউ আবার স্কুলেও পড়ে। যেমন মানিক ব্যাস স্থানীয় স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। সে সেজেছে শিব। গৌরাঙ্গ ব্যাস সেজেছে পার্বতী। তাদের কয়েক প্রজন্ম এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। তবে এখন আর আগের মতো তাদের কদর নেই। আগে নিজেদের বিনোদনের জন্য চৈত্র শেষে বহুরূপী সাজত তারা। এখন তাতে মিশে গিয়েছে বাড়তি রোজগারের একটা তাগিদ। তবে খুব যে কিছু আয় হয়, তেমনটাও নয়। খানিকটা মনের খোরাক মেটানো আর কিছুটা বাড়তি রোজগার এই দুইয়ের চাহিদা মেটাতেই বহুরূপী সাজা।
বহুরূপী পার্বতী জানাল, মা বাপেরবাড়ি আসছেন। আমি দুর্গা সেজেছি। তাই অনেকে প্রণাম করে কিছু টাকা দিচ্ছে। দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হচ্ছে। তারা বলে, পুজোর আর বেশি দিন নেই। আমাদের শিব-পার্বতী রূপে দেখে অনেকেই ঘর পরিষ্কার শুরু করছেন। অনেকে পুজোর কেনাকাটা শুরু করে দিচ্ছেন। পুজোয় আমরাও খুব আনন্দ করব।