রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

৩২১ বছরে পদার্পণ করছে বিশ্বাস বাড়ির পুজো, আজও রীতি মেনে হয় মাতৃ আরাধনা

September 14, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলার সিংহাসনে তখন নবাব আলিবর্দী খাঁর রাজত্ব। মারাঠা বর্গী আক্রমণ রুখতে আলিবর্দী খাঁ ব্যস্ত। গভীর রাতে তাঁর খাজাঞ্চি কিছু কাগজ নিয়ে এলেন। তা দেখে চমকে উঠলেন আলিবর্দী। কাগজগুলি রেখে দিলেন। জীবন বাজি রেখে খাজাঞ্চি কাগজগুলি রক্ষা করেছিলেন বলে নবাব আলিবর্দী খাঁ তাঁকে পুরস্কৃত করলেন। খাজাঞ্চির বিশ্বস্ততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিশ্বাস উপাধি দিলেন। গঙ্গোপাধ্যায় পদবি ছেড়ে বিশ্বাস ব্যবহার করতে শুরু করলেন খাজাঞ্চি। তাঁদের বাড়ির দুর্গাপুজো ৩২১ বছরে পদার্পণ করছে এবার।

আরও পড়ুন: হুগলিতে পুজোর মণ্ডপসজ্জায় ছায়া ফেলছে প্রায় হাজার বছর আগের প্যাগোডা

খাজাঞ্চি পূর্ব বর্ধমানের দিগনগরে চলে যান। তসরের ব্যবসা শুরু করলেন তিনি। বিশ্বাস পরিবারের রামমোহন বিশ্বাসের আমলে ব্যবসায় শ্রীবৃদ্ধি হল। রামমোহন ছিলেন নিঃসন্তান। বংশের উত্তরাধিকারী নিয়ে চিন্তায় পড়েন তিনি। গুরুদেবের শরণাপন্ন হলে গুরুদেব তাঁকে নির্দেশ দেন মানকরে গিয়ে দুর্গা পুজো করার। রামমোহন তাঁর সমস্ত সম্পত্তি গুরুদেবকে সমর্পণ করে মানকরে এসে ছোট এক চালার ঘরে শুরু করলেন দুর্গাপুজো। মা দুর্গার আশীর্বাদে সন্তান লাভ করলেন। সন্তানের নাম দিলেন দুর্গাদাস বিশ্বাস। সেই থেকে দুর্গাপুজো শুরু।

আরও পড়ুন: রেষারেষি ভুলে বাঙালির দুগ্গাপুজোকে বাঁচাতে ঝাঁপালেন পুজো উদ্যোগক্তারা

আজও রীতি মেনে পুজো হয়। দেবীর কাঠামো পুজো হয় উল্টোরথের দিন। পুজো শুরুর আগে কুললক্ষ্মীকে দেবীর পাশে নিয়ে আসেন বাড়ির মহিলারা। ব্রাহ্মণ পুরুষরা মায়ের ভোগ রান্না করেন। ভোগে রয়েছে বিশেষ নিয়ম। সপ্তমীতে সাত সের, অষ্টমীতে আট সের ও নবমীতে নয় সের চালের নৈবেদ্য দেবীকে নিবেদন করা হয়। এছাড়া সপ্তমীতে সাত রকম, অষ্টমীতে আট রকম ও নবমীতে নয়রকম ভাজা দেবীকে দেওয়া হয়। সপ্তমীর দিন থেকে একটি প্রদীপ দেবীর সামনে জ্বালিয়ে রাখতে হয়। নজর রাখা হয় সেটি যেন না নেভে। বিশ্বাস বাড়ির অষ্টমী পুজো বিখ্যাত। কামান দেগে অষ্টমী পুজোর সূচনা হত। এখন শূন্যে গুলি চালিয়ে সন্ধিপুজোর সূচনা হয়। ঠাকুর দালানের চারদিকে চার ব্যক্তি মশাল হাতে দাঁড়ান। জ্বালানো হয় ১০৮টি প্রদীপ। নবমীর দিন নরনারায়ণ সেবার ব্যবস্থা করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#tradition, #devi, #Worship

আরো দেখুন