ভেস্তে গেল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক্তারদের বৈঠক! কালীঘাট থেকে বেরিয়ে গেলেন মন্ত্রী- আমলারা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: RG Kar মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের প্রতিবাদে আজ ৩৫তম দিন ধরে চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি। শনিবার দুপুরে জট কাটাতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধরনামঞ্চে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সব দাবিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এরপর রাজ্যের মুখ্যসচিবের ইমেলের পরে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ৬টা নাগাদ বৈঠকের আবেদন যায় ডাক্তারদের কাছে। সেই আবেদনে সারা দিয়ে তারা কালীঘাটে এলেও বৈঠকের ভিডিও লাইভ স্ট্রিম করার দাবি করেন তারা। এর রফাসূত্র না মেলায় ভেস্তে যায় বৈঠক।
লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিওগ্রাফিতে আপত্তি ছিল রাজ্য সরকারের। মুখ্যমন্ত্রী বাসভবন হাই সিকিওরিটি জোন। নিরাপত্তার জন্য সেখানে লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব না। এর পর ডাক্তারি পড়ুয়ারা ভিডিওগ্রাফির দাবি করেন। তাঁদের সঙ্গে আসা ভিডিওগ্রাফারকে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকতে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাতেও রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। এর পর পড়ুয়াদের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে যে ভিডিও করা হচ্ছে, বৈঠক শেষে সেই ভি়ডিও-র কপি আন্দোলনকারীদের দিতে হবে। তাতেও রাজি হয়নি রাজ্য। ফলে বৈঠক আর এগোয়নি। আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট দাবি, স্বচ্ছতার প্রশ্নে তাঁরা পিছু হঠবে না। বৈঠকে কী কথা হল তা জানার অধিকার রয়েছে স্বাস্থ্যভবনের সামনে অপেক্ষারত আন্দোলনকারীদের।
বৃষ্টিতে কাকভেজা আন্দোলনকারীরা যখন আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাড়ির ভেতরে আসছেন না এবং জুনিয়র ডাক্তারদের বোঝাতে উদ্যোগী মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব প্রায় ব্যর্থ, তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, “লক্ষ্মী ভাইবোনেরা আমার, বৃষ্টিতে ভিজো না। প্লিজ এসো তোমরা। মিটিং করতে ইচ্ছে না করে এক কাপ চা খেয়ে যাও। আমার কাছে শুকনো জামাকাপড় আছে, বৃষ্টিতে যারা ভিজেছো তাঁরা নাও। আমি তোমাদের দিয়ে দিচ্ছি।” মমতার আবেদন, “লক্ষ্মী ভাইবোনেরা আমার, মানুষের স্বার্থে এসো। কথা বলো। তোমরা কথা না বলতে চাইলে বৃষ্টিতে ভিজো না।” তিনি আরও বলেন, ” তোমরা কথা বলতে চেয়েছিলে, তাই ডেকেছি। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের কথা আগে বলোনি। সিকিওরিটির বিষয় তো আছে। আমি মিনিটস করে দেব। তাতে আমি, আমার সরকার স্বাক্ষর করে দেবে। আমি আজ ভিডিও দিতে পারব না। সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে ভিডিও আমি দেব।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন , আন্দোলনকারীরা যে চিঠি দিয়েছিল, তাতে সরাসরি সম্প্রচারের কথা ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘যদি না-ই আসো তা হলে চিঠি দিলে কেন? আমাকে অসম্মান করছ। এর আগেও আমি তিন দিন অপেক্ষা করে বসে থেকেছি। রাজনীতি ভুলে যাও। মানুষের স্বার্থে এসো, কথা বলো। মিনিটস সই করে দেব, আমাদের তরফে একজন সই করবে, তোমাদের তরফেও এক জন সই করবে। তোমরা যদি কথা বলতে না চাও, বৈঠক না করো, অন্তত এক বার ভিতরে এসে চা খেয়ে যাও।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘সব দাবি মানা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টে অনুমতি নিয়ে ভিডিয়ো দেওয়া হবে। আমার উপর ভরসা রাখো, তোমাদের মিসলিড করব না।’’
এরপরেও রফা না হলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে মন্ত্রী ও আমলারা, ভেস্তে যায় বৈঠক।