কয়েকজনের জন্যে ভেস্তে গেল আলোচনা? বলছেন খোদ চিকিৎসকেরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাতে গোনা কয়েকজন অতিবাম জুনিয়র চিকিৎসকের জন্যই আলোচনার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল! শনিবার রাত থেকেই জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রায় সবাই এমন অভিযোগ তুলেছেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, অভয়ার নৃশংস মৃত্যুর বিচার নয়। দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থপূরণ করতে শনিবার দিনভর আলোচনা নিয়ে নাটক করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কট্টর বামপন্থী এক-দু’জন জুনিয়র এদিনের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছ। তাঁরা বিচার চান? স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন চান? না-কি নেতা হতে চান? প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: আবারও সাইবার অপরাধের শিকার সৌরভজায়া ডোনা!
শনিবার দুপুর একটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সল্টলেকের ধরনা মঞ্চে হাজির হন। সটান বসে পড়েন ধরনা মঞ্চে। দেশের কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের পাশে বসে তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন বলে মনে করা যাচ্ছে না। গণআন্দোলন থেকে উঠে আসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র চিকিৎসকদের বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তিনি উঠে এসেছেন। জানিয়ে দেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। অভয় দিয়ে বলেছেন,‘নিশ্চিন্তে কাজে ফিরে আসুন।’
মেদিনীপুর, বর্ধমান বা বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নরা তখনও বিস্মিত! জেলার মেডিক্যাল পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ কাজে ফিরতে রাজি। কার্যত তিন থেকে চার টুকরো হয়ে গিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন।
দুপুর ১টা পাঁচ থেকে মেল পালটা-মেল করে সন্ধে সাড়ে ছ’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির বাইরে নিজেরা ভিজেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বাধ্য করেছেন ভিজতে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানবিক হয়েছেন, তাঁদের ভাই-বোন বলে সম্বোধন করেছেন কিন্তু তাঁরা একগুঁয়ে হয়ে থেকেছেন। রাজ্যের প্রবীন চিকিৎসক মহলও জুনিয়রদের আচরণে ক্ষুব্ধ-বিরক্ত। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দলও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে এমনভাবে অসম্মান করেনি। ডা.রুমেলিকা কুমার, ডা.অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের মতো উগ্র বাম চিকিৎসকের দিকে আঙুল উঠছে।
বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও চিকিৎসকদের এদিনের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রবীন চিকিৎসক ডা.সুকুমার মুখোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “এমন একগুঁয়েমি হয়ে লাভটা কী হল? সুপ্রিম কোর্টে এই ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না তো? ভেবেছিলাম রাতে সমস্যা মিটবে। কিন্তু অত্যন্ত হতাশ।” সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের পক্ষ থেকে ডা.সজল বিশ্বাস বলেছেন, “আড়াই ঘণ্টা মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজেছেন। বার বার অনুরোধ করেছেন। অন্তত সৌজন্য-ভদ্রতা দেখিয়ে আলোচনায় বসতে পারত জুনিয়ররা। কিন্তু সেই পথেই হাঁটেনি তাঁরা। অত্যন্ত হতাশাজনক।”