থানার মধ্যেই সেনা কর্তার মেয়ে যৌন নিগ্রহের শিকার, ঘটনায় তোলপাড় বিজেপি শাসিত ওড়িশা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মাত্র ১০০ দিন আগে ওড়িশায় ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। মাত্র এই সময়ের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ল ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সুশাসনের অঙ্গীকার। থানার মধ্যেই নারী নির্যাতন! যৌন নিগ্রহের শিকার প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ারের মেয়ে। ভুবনেশ্বর সংলগ্ন ভরতপুরের এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেনার তরফে বিষয়টি নিয়ে ওড়িশার বিজেপি সরকারকে চাপ দেওয়ার পরই ঘটনার কথা জানাজানি হয়।
ঘটনা সূত্রপাত গত রবিবার রাতে। ভুবনেশ্বরের নিজের একটি রেস্তরাঁ রয়েছে ওই তরুণীর। তাঁর অভিযোগ, রেস্তরাঁ বন্ধ করে রাত ১টা নাগাদ বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় তাঁদের উপর হামলা চালান এক দল যুবক। তার পরই তাঁরা ভরতপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় থানায় মাত্র একজন মহিলা কনস্টেবল ছিলেন। শুরুতেই তিনি অপমানজনক কথা বলতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর আরও কয়েকজন পুলিসকর্মী উপস্থিত হন। হঠাৎ করেই ওই সেনা আধিকারিককে লকআপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
এভাবে একজন মেজরকে গ্রেপ্তার করা যায় না বলে প্রতিবাদ করেন তরুণী। আর এরপরেই শুরু হয় অত্যাচার। থানার মধ্যেই তাঁর প্যান্ট খুলে নেওয়ার পাশাপাশি বুকে একাধিকবার লাথি মারেন এক পুরুষ পুলিসকর্মী। এমনকী তরুণীকে তিনি নিজের গোপনাঙ্গ দেখান বলেও অভিযোগ। থানার আইসিও তরুণীর উদ্দেশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেন। বাদ যাননি মহিলা পুলিসকর্মীরাও। তাঁরাও ওই তরুণীর উপর অত্যাচার চালান। অত্যাচারের জেরে নির্যাতিতার চোয়াল সরে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে। একটা সময় প্রাণে বাঁচতে এক পুলিসকর্মীকে কামড়ে দেন তিনি। এরপরই পুলিসকে মারধর ও থানা ভাঙচুরের অভিযোগে তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। আদালতের তত্ত্বাবধানে সিট গঠন করে এই ঘটনার তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিসের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তরুণীর বাবার অভিযোগ, ‘নিজেদের দোষ ঢাকতে পুলিস আমার মেয়ের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ এনেছে।’ অভিযুক্ত পুলিসকর্মীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন। ওড়িশা পুলিসের ডিজি ওয়াই বি খুরানিয়া জানিয়েছেন, ‘অসত্ আচরণের অভিযোগে পাঁচ পুলিসকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’ তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদও ঘটনার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বিজেপি। তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। সারা দেশের মতোই বিজেপি শাসিত ডাবল ইঞ্জিন সরকারের ওড়িশাতেও ঘটেছে ধর্ষণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা।’