বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বিনোদন জগতে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে, শিল্পী তাড়া করছে করোনাকালের স্মৃতি

September 22, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুজোর আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি। এ দিকে শহরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বুকিংয়ের খাতা খুললে অন্য ছবি ধরা পড়ছে। ২০২০ সাল। অতিমারির জেরে আড়ম্বর ছাড়াই দুর্গাপুজো পালন করেছিল বাংলা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুজোর উদ্বোধন থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপরেও জারি ছিল নিষেধাজ্ঞা। করোনা অতীত হলেও চলতি বছরে আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বিনোদন জগতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। চলতি বছরে পুজোর আগে বাংলার অনুষ্ঠান আয়োজকদের তাড়া করছে চার বছর আগের শারদীয়ার স্মৃতি। বাতিল হচ্ছে একের পর এক অনুষ্ঠান। পুজো হলেও মনোরঞ্জনে মন নেই বড় অংশের মানুষের।

মঞ্চে গায়িকা জোজোর অনুষ্ঠান দেখতে মুহূর্তে ভিড় জমে। শহর থেকে শহরতলি, পুজোয় তাঁর অনুষ্ঠান বাঙালির কাছে বিশেষ আকর্ষণ। আরজি-কর কাণ্ডের বিচারের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু সব সময় শিল্পীদের রোজগারের উপরেই কেন কোপ পড়বে? সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “কিছু হলেই, প্রথমে কেন শিল্পীদের উপরে কোপ পড়ে? মানুষ মনে করেন, এটা শুধুই মনোরঞ্জনের জায়গা। একজন শিল্পী হয়তো এক লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। কিন্তু তিনি এটা একার জন্য নিচ্ছেন না। গোটা সেটআপের জন্য নিচ্ছেন।”

শিল্পীদের অনুষ্ঠান ঘিরে আরও অনেকের রোজগার চলে বলে দাবি জোজোর। তাঁর জবাব, “শিল্পীর সঙ্গে যন্ত্রশিল্পীরাও থাকেন। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার থাকেন। এ ছাড়া সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চ যাঁরা সাজান অথবা সেখানে যে হকাররা স্টল দেন, তাঁদেরও আয়ের জোগান হয় এই অনুষ্ঠানগুলো থেকে। কিন্তু মানুষ অদ্ভুত ভাবে গানবাজনাটাই আগে বন্ধ করে দিতে বলেন। অথচ, এই শিল্পীরাই যে কোনও দুর্যোগে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁরাই কিন্তু অনুষ্ঠান করে টাকা তুলে দেন।”

তাঁর কথায়, “যেখানে ১৫ হাজার মানুষ গান শুনতে আসেন, সেখানে আমি নিজের বক্তব্য তুলে ধরতে পারি। মঞ্চটাই তো আমার সবচেয়ে বড় প্রতিবাদের জায়গা। আর গানবাজনা শুনলেই প্রতিবাদের জোর কমে যাবে, এটা ভুল ধারণা।”

আরও পড়ুন: চলচ্চিত্রশিল্পে যুক্ত মহিলাদের যৌন হেনস্তা ও লিঙ্গ বৈষমের অভিযোগের নিষ্পত্তিতে হেমা কমিটির ধাঁচে ‘আত্মশ্রী’ গড়ছে রাজ্য

শহরের অস্থির পরিস্থিতির জন্য একাধিক কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে রূপঙ্করেরও। গায়কের স্বীকারোক্তি, “খারাপ লাগছে কাজ হারাচ্ছি বলে। আমি তো একা নই। আমার সঙ্গে যন্ত্রশিল্পীরাও রয়েছেন। বাদ্যযন্ত্র যাঁরা বয়ে নিয়ে যান মঞ্চ পর্যন্ত, তাঁদেরও পারিশ্রমিক দিতে হয়। প্রত্যেকের উপর প্রভাব পড়েছে। সময়টা স্থির না হলে এটা ঠিক হবে না।”

এই পরিস্থিতি নিয়ে লোপামুদ্রা মিত্র বলেছেন, “মানুষ বুঝতে পারছেন না, এটা একটা পেশা। এখান থেকে বহু মানুষের পেট চলে। সঙ্গীত জগতের বহু শিল্পী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এটা মানুষের বোঝা দরকার। আমরা বছর তিরিশের বেশি গান গাইছি। তাই আমাদের উপরে হয়তো সরাসরি প্রভাব পড়ছে না। কিন্তু আমার সঙ্গে যে যন্ত্রশিল্পীরা আছেন, তাঁরা কিন্তু বেশ চিন্তিত। ওঁদের বয়স কম। জীবনে লক্ষ্য আছে। ওঁদের অর্থ রোজগারের অন্য কোনও জায়গা নেই। আমার গানের সংসারেও ১৮-১৯ জনের রোজগারের কথা আমাকে মাথায় রাখতে হয়। তাই এটা খুবই আশঙ্কার বিষয়। আমাদের মন ভাল নেই ঠিকই। কিন্তু, পেট তো চালাতে হবে। বাজারে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। মাদক দ্রব্যের বিক্রিতেও কোনও প্রভাব নেই। কিন্তু, সব কিছুর প্রভাব সঙ্গীতশিল্পীদের রুজিরুটিতেই পড়ে।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Singer, #RG Kar Incident, #entertainment industry

আরো দেখুন