স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভে কত খরচ হয়েছে জানেন? শুনলে চোখ কপালে উঠবে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: স্বাস্থ্য ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করেছিল। চলেছিল ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকরা তো বটেই, ওই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন কয়েকশো সাধারণ মানুষ।
১১ দিন ধরে সবার খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। বহু মানুষ কেজি কেজি ড্রাই ফ্রুটস, ফ্রুট জুস, কেক, বিস্কুট এবং কয়েক হাজার টাকার জল দিয়েছেন। তবে, খাবার বেড়ে যাওয়ায় মিক্সড ফ্রায়েড রাইস ভর্তি প্যাকেট রাস্তায় গড়াগড়ি খেতেও দেখা গিয়েছে। শোওয়ার জন্য বিছানা। মাথার উপর বাঁশ-ত্রিপলের প্যান্ডেল। গরমের হাত থেকে বাঁচতে বড় বড় স্ট্যান্ড ফ্যান। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য বড় জেনারেটর। না, কোনও পিকনিক নয়, এ দৃশ্য স্বাস্থ্য ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে চলা জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভের। টানা সেই আন্দোলনে খরচের তথ্য আসতে শুরু করেছে পুলিসের কাছে। যা দেখেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। পুলিস ও ডেকরেটর্স সূত্রের খবর, এই ১১ দিনে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা! আন্দোলনকারীরা ‘উৎসবে না’ স্লোগান দিলেও তাঁদের অবস্থানের খরচ বিগ বাজেটের পুজোকেও হার মানিয়ে দিয়েছে।
পুলিস ও ডেকরেটর্স সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিপলের ছাউনি, মঞ্চ বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। দু’টি বড় জেনারেটরের ভাড়া দিন প্রতি ৬-৭ হাজার। অর্থাৎ, দিনে মোট ১৪ হাজার টাকা। ১১ দিনে ভাড়া মেটাতে হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। এই বড় জেনারেটরে প্রতি ঘণ্টায় ৯-১০ লিটার তেল লাগে। অর্থাৎ, দু’টি জেনারেটরে প্রায় ২০ লিটার। সেই তেলের দাম ১ হাজার ৮২০ টাকা। সারা দিনে গড়ে ১৫ ঘণ্টা চললেও দিন প্রতি তেল খরচ ২৭ হাজার ৩০০ টাকা। ১১ দিনে প্রায় ৩ লক্ষ ৩০০ টাকা। এছাড়া ছিল চারটি মাঝারি জেনারেটর। সেগুলির ভাড়া দিন প্রতি ৩-৪ হাজার। অর্থাৎ, মোট ১৬ হাজার টাকা। ১১ দিনে ভাড়া বাবদই গিয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। এই জেনারেটরগুলিতে তেল খরচ প্রতি ঘণ্টায় ৫-৬ লিটার। অর্থাৎ, চারটির জন্য মোট ২৪ লিটার। প্রতি ঘণ্টায় ২ হাজার ১৮৪ টাকা। গড়ে ১৫ ঘণ্টা চললে খরচ ৩২ হাজার ৭৬০ টাকা। ১১ দিনে প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৬০ টাকা।
৫০টিরও বেশি বড় স্ট্যান্ড ফ্যানের প্রতিদিন ভাড়া প্রায় ১০ হাজার টাকা। ১১ দিনের বিল ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। একটি বায়ো-টয়লেটের একদিনের খরচ ২-৩ হাজার টাকা। ২০টির ভাড়া প্রতিদিন ৬০ হাজার। ১১ দিনে এই খাতেও গিয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে মালপত্র নিয়ে আসা-যাওয়ার খরচ। সেই গাড়ি বাবদ দিতে হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অভয়া ক্লিনিকের প্যান্ডেলের জন্য প্রতিদিন ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই রাহা খরচ মেটাতে শুধু নিউটাউনের আবাসিকরাই প্রায় ৭ লক্ষ টাকা দান করেছেন।