বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা, প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: খোদ জলশক্তি মন্ত্রকের সাম্প্রতিক বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার বাংলা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইরিগেশন অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টে ঋণ বরাদ্দের মাত্র ৭১৭ কোটি টাকা এসেছে কোষাগারে। বকেয়া প্রায় ১,৭০০ কোটি টাকা। ডিভিসির ক্যানালে সেচ ব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়ন ও রাজ্যের বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। আগামী বছরই কাজ শেষ হওয়ার কথা। টাকা না আসায় প্রকল্প কার্যত বিশ বাঁও জলে।
রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ার কারণে মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। ‘ম্যান মেড বন্যা’ নিয়ে তিনি চাপ বাড়াতেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। ডিভিসির কর্মীদের একদিনের বেতন বন্যাত্রাণে দান করার আবেদন জানানো হয়েছে। পাঠানো হচ্ছে বিশেষ প্রতিনিধি দল। জলশক্তি মন্ত্রকের অধীন গঙ্গা ফ্লাড কন্ট্রোল কমিশনের তিন সদস্য থাকছেন দলে। সুন্দরবন ও বিভিন্ন এলাকায় বন্যা রোধের পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যেই পরিদর্শন চালাবেন তাঁরা। সুন্দরবনের আয়লা বাঁধ প্রকল্পের বেশ কিছু কাজ এখনও থমকে। সম্প্রতি সমস্ত তা সম্পূর্ণ করার নয়া পদ্ধতি বের করেছে রাজ্য সেচদপ্তর। সুন্দরবনকে রক্ষা করতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় আপার ডেল্টা প্রকল্প হাতে নিয়েছে রাজ্য। এর জন্য প্রয়োজন কেন্দ্রীয় ছাড়পত্রের। কেন্দ্রীয় টিমের কাছে তা তুলে ধরা হবে।
কেন্দ্র পর্যাপ্ত অর্থ না দেওয়াই কি বন্যা নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়েছে রাজ্য? ডব্লুবি-এমআইএফএমপি প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের ১১ আগস্ট। আগামী বছর ৩০ নভেম্বর এটির সময়সীমা শেষ হচ্ছে। ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা সামগ্রিক প্রকল্প খরচ। এর মধ্যে ঋণের পরিমাণই ২ হাজার ৪০৭ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা। বরাদ্দকৃত ঋণ-অর্থের প্রাপ্য কিস্তি বকেয়া থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তিনি বলেন, রাজ্যের তরফে সমস্ত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু, রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য আটকে রেখেছে কেন্দ্র। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়ার মতো জেলার মানুষ রক্ষা পাবেন।