সপ্তাহের শেষে পুজো শপিং জমজমাট, হাতিবাগান-ধর্মতলা-গড়িয়াহাট তিল ধারণের জায়গা নেই
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সপ্তাহের শেষে পুজো শপিং এখন একেবারে মধ্যগগনে। আবহাওয়া অনেকটাই ভাল। ধর্মতলা শুধু নয়। হাতিবাগানে বিধান সরণির দু’ধারেও তিল ধারণের জায়গা নেই। সিঁথির মোড় থেকে বাজার করতে এসেছিলেন তুহিনা দাস। জানালেন, পুজোর কেনাকাটায় এই নিয়ে তিনবার হাতিবাগানে এলেন। নিজের জন্য শুধু নয়, আত্মীয় স্বজনদেরও কিছু কিছু উপহার দেওয়ার চল রয়েছে তাঁদের পরিবারে। সেই মতো শাড়ি ও পাঞ্জাবি যেটুকু কেনা বাকি ছিল, সেটুকু সেরে নিচ্ছেন। বাকি রয়েছে শুধু বাড়ির দেবতা গোপালের জামা কেনা। বললেন, ‘যাঁর নিত্য পুজো করি, সে আমার সন্তানতুল্য। বাকিগুলি যেমন তেমন কেনা হলেও, গোপালের জামা কেনায় আমি খুব খুঁতখুঁতে। যত ভিড়ই হোক, আমি অন্তত খান দশেক দোকান না ঘুরে তার জামা কিনব না। ২৫০ টাকা বাজেট রেখেছি। আশা করছি তাতে অন্তত চারটি জামা কিনতে পারব।’
এদিকে বাবার হাত ধরে বউবাজার থেকে এসেছে দশ বছরের আগমনী চৌধুরী। সে এবার ঠাকুর দেখার জন্য একটা বেজায় জমকালো জুতো পেয়েছে। দারুণ খুশি। জানালো, এবার একটা দারুণ স্কার্ট-ব্লাউজ কিনে দিয়েছে বাবা। এই জুতোর সঙ্গে দারুণ মানাবে ড্রেসটা। অষ্টমীর সন্ধ্যার পোশাক সে এখনই ছকে ফেলেছে।
পুরুষ হোক বা মহিলা, গত বছর থেকেই পুজোয় দারুণ সাড়া ফেলেছে ফ্লোরাল প্রিন্ট। জল রঙে ফুল আঁকলে যেমন চোখজুড়নো সৌন্দর্য ফুটে ওঠে তেমনই নানান ফুলের সম্ভার সে পোশাকের গায়ে। টি-শার্ট থেকে শুরু করে লিনেনের শাড়ি বা শার্টিং, সর্বত্রই অর্কিড বা গোলাপের অবয়ব ফুটে উঠছে। পুরুষদের ক্যাজুয়াল শার্টের পাশাপাশি ফর্মাল শার্টের গায়েও সেই ছোট ছোট ফুলের মোটিভ। এমনই হরেক পোশাক শোভা পাচ্ছিল গড়িয়াহাটজুড়ে।
আর ক্যাপ বন্দুকের আওয়াজ আর বারুদের ঝাঁঝালো গন্ধ না থাকলে শৈশবে পুজো থাকত অসমাপ্ত। তারপর দিন গিয়েছে ক্যাপ বন্দুকের। তবে এবছর সেই নস্টালজিয়া যেন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছিল ধর্মতলা চত্বরজুড়ে। শুক্রবার দুপুরে মেঘ-রোদ্দুরের খেলা চলছে। লিন্ডসে স্ট্রিটে তিল ধারণের জায়গা নেই। তখন হঠাৎ গোটা এলাকা মুখরিত ক্যাপ বন্দুকের আওয়াজে। একাধিক বিক্রেতা বন্দুক ‘ফাটিয়ে’ ক্রেতা ডাকছিলেন। বাংলার এই শারদ-বন্দুকে এখন চীনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। দেশি বন্দুকের জায়গা দখল করেছে চীনা বন্দুক। ক্যাপের বদলে বারুদ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাঙা দেশলাই কাঠি। যাঁরা শ্রীলেদার্স থেকে জুতো কিনে জওহরলাল নেহরু রোড থেকে বাস বা ট্যাক্সি ধরার জন্য এগচ্ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে থাকা খুদেদের হাতে শোভা পাচ্ছিল একটি করে বন্দুক।