মহালয়ার ভোরে বেজে উঠল না বীরেন্দ্রকৃষ্ণর চণ্ডীপাঠ! তারপর কী হল?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পঁচাত্তর সাল, দেশে তখন সব পাল্টে ফেলার হিড়িক। জরুরি অবস্থা চলছে। ১৯৭৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মহালয়ার ভোরে আকাশবাণী কলকাতা থেকে বেজে উঠল না চিরাচরিত ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। সম্প্রচারিত হল নতুন অনুষ্ঠান ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম্’। বাণীকুমার, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, পঙ্কজকুমার মল্লিক সবাই বাদ! জরুরি অবস্থার সময়েই ‘সঙ্গীত শিক্ষার আসর’ থেকে অপসারিত হতে হয়েছিল পঙ্কজকুমার মল্লিককে। মহিষাসুরমর্দিনীর বদলে বাজল ধ্যানেশনারায়ণ চক্রবর্তীর লেখা আলেখ্য, শ্যামল গুপ্ত-র লেখা গান, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুর আর প্রধান ভাষ্যপাঠক মহানায়ক উত্তমকুমার। খোদ নয়া দিল্লির নির্দেশ মেনেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল বেতার কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রচার শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন বাংলার মানুষ। টেলিফোনে ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করলেন শ্রোতারা। পত্র-পত্রিকায় সমালোচনার ঝড় উঠল। উত্তমকুমারের ‘স্টারডাম’ ধোপে টিকল না। জনরোষ, বিক্ষোভ এবং প্রবল চাপে জনসাধারণের চাহিদাকে মর্যাদা দিয়ে সেই বছরই ষষ্ঠীর দিন সম্প্রচারিত হয় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। পরের বছর ১৯৭৭ থেকে স্বমহিমায় মহালয়ার ভোরে ফিরে আসে মহিষাসুরমর্দিনী। সবচেয়ে জনপ্রিয় উপস্থাপনা নিয়ে আর কোনওদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে এগোয়নি বেতার কর্তৃপক্ষ। আজও অন্যথা হয়নি। সে’বার ঐতিহ্যের কাছে হার মেনে গিয়েছিল জনপ্রিয়তা। তবে বাণী কুমার এবং বীরেন ভদ্র রেডিওতে ফিরলেও পঙ্কজকুমার মল্লিকের আর প্রত্যাবর্তন হয়নি।