শান্তিপুরের জজ পণ্ডিতের বাড়ির পুজোর বয়স চারশো বছর
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গয়ার যদুয়া গ্রামে একসময় জমিদার ছিল চট্টোপাধ্যায় পরিবারের। সেখানের বাসিন্দা ছিলেন পরিবারের ত্রয়োদশ পুরুষ পীতম্বর চট্টোপাধ্যায়। ব্রিটিশদের সঙ্গে ছিল তাঁর ওঠাবসা। সেই সুবাদেই পেয়েছিলেন তর্কবাগীশ উপাধিও। সে যুগেই প্রজাদের নানান সমস্যার বিচারের ভার ছিল তর্কবাগীশের উপর। এছাড়াও সংস্কৃত সাহিত্যে গভীর পাণ্ডিত্যও ছিল পীতাম্বরবাবুর। উভয় কারণেই ‘জজ পণ্ডিত’ হিসেবে অধিক পরিচিতি লাভ করেন। একই সূত্রে শান্তিপুরে তাঁদের বাড়ির নামও জজ পণ্ডিত বাড়ি।
এতো গেল পরিবারের ইতিহাস। পুজোর ইতিহাস কী? ব্রিটিশ আমলেই গয়া থেকে শান্তিপুরে চলে এসেছিলেন পীতাম্বরবাবু। শান্তিপুরে পত্তন হয় নতুন জমিদারির। নতুনভাবে শুরু হয় দেবী আরাধনা। আর পাঁচটা বনেদি বাড়ির পুজোর মতোই জজ বাড়িতেও আকর্ষণীয় ব্যতিক্রম রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ জায়গাতেই সপরিবারে মহিষমর্দিনী রূপে দেবী দুর্গা পূজিত হন। কিন্তু জজ বাড়িতে পুজোয় ঢুঁ মারলে দেখা যাবে, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর গরহাজির। এটাই এই পরিবারের সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম।
রথের দিন পাটে সিঁদুর দিয়ে শুরু হয় দেবীর প্রতীক্ষা। তারপর থেকেই বাড়ির ঠাকুর দালানে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। সপ্তমীতে মোচা, কচুশাক সহ মরশুমি ফসলের ভোগ তো বটেই। থাকে ফ্রায়েড রাইসও। অষ্টমীতে সাদাভাত সঙ্গে ইলিশ। নবমীতে অন্যান্য ভোগের সঙ্গে বিশেষ পদ চালতার চাটনি থাকতেই হবে। একসময়ে এই নবমীতেই পাঠা বলি হলেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বর্তমানে। নবমীতে আগে বাইরে থেকে ছেলের দল ডগর বাজিয়ে নাচতে নাচতে বাড়িতে কাদা খেলতে আসত। বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে পুজোয় জজ বাড়িতে ডগর বাজানো দেখা যেতে পারে। দশমীতে দেবী দুর্গা পান্তা খেয়েই পাড়ি দেন কৈলাসের পথে।