ঠাকুর দেখতে ম্যাপের উপর নয়, মানুষের উপর ভরসা রাখাই ভালো, মনে করছেন অনেকেই
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শহরতলি থেকে এই সময় শহরে ঠাকুর দেখতে আসেন অনেক মানুষ। আবার শহরে থাকলেও কোন পুজোটা কোন রাস্তায়, খুঁজতে অনেকেরই কালঘাম ছোটে। এই সময় ভরসা জোগায় মোবাইল ম্যাপ। কিন্তু ম্যাপ মাঝেমধ্যেই রাস্তার প্যাঁচে ফেলে দেয়। তাই ভরসাস্থল হয় স্থানীয় দাদা-কাকুরা। কাউকে যদি রাস্তায় দেখা যায়, একা কোঁচকানো জামা পরে কিংবা হাফপ্যান্ট আর টিশার্টে ঘুরে বেরাচ্ছেন, তবে তিনি পুজোর ভিড়ে বেমানান। জেলার ভাই-বোনরা বুঝে নেন, ইনি স্থানীয়।
ফলে তাঁকেই জিজ্ঞাসা করেন— কাকু দেশপ্রিয় পার্ক কীভাবে যাব? হাসিমুখে উত্তর দেন তাঁরা। রবিবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে ভালোই ভিড় হয়েছে। হিন্দুস্থান পার্কের রাস্তায় চা খেতে এসেছিলেন স্থানীয় রাজা দাস। বলছিলেন, ‘আর বলবেন না! সবাইকে ঠিকানাই বলে চলেছি। আসলে ওঁরা এখানে আসেন, কিন্তু রাস্তা জানেন না। বলে দিই। আমিও ওঁদের জায়গায় গেলে নিশ্চয়ই ওঁরা সাহায্য করবেন।’
আবার অনেকের হাতে ফোন। ডেস্টিনেশনে লেখা রয়েছে ‘ত্রিধারা সম্মিলনী’। বাস এগিয়ে চলেছে। আচমকা এক মহিলা চেঁচিয়ে কন্ডাক্টরকে বললেন, ‘লেক ভিউ নামব’। অভিজ্ঞ বাস কন্ডাক্টর হাবভাব দেখেই বুঝেছেন, তিনি ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন। এরপরই কন্ডাক্টর বললেন, ‘ত্রিধারা নামবেন তো? চুপ করে বসুন। ঠিক নামিয়ে দেব।’ শুনেই থতমত খেয়ে গেলেন তরুণী। কিছুই বলার নেই। সিটে গিয়ে বসতে যাবেন, দেখলেন সেটি দখল হয়ে গিয়েছে। অগত্যা মুখটা বাংলার পাঁচ করেই দাঁড়ালেন। ঠিক সময় নেমেও গেলেন ত্রিধারায়।
খড়্গপুর থেকে একডালিয়া আর শ্রীভূমি দেখতে এসেছিলেন সুমন দাস। বলছিলেন, ‘কলকাতার বন্ধুদের ফোন করে রাস্তা জেনে নিয়েছি। কোন বাসে কোথা থেকে আসব। তাই সমস্যা হয়নি। আমরা তো শুধু এই দু’টি দেখব বলেই ঠিক করেছিলাম। এখানে এসে আরও কয়েকটি দেখে নিলাম।’ দিনের শেষে অনেকেই বলছেন, ম্যাপের উপর নয়, মানুষের উপর ভরসা রাখাই ভালো।