৩০০ বছরের বেশি পুরনো দুর্গাদাসের পুজোর সঙ্গে জড়িত নীলচাষের ইতিহাস
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলায় তখনও বঙ্গভঙ্গ হয়নি। ইংরেজ শাসনে নীলকর সাহেবের দাপট ছিল বঙ্গজুড়ে। তাদের বিরুদ্ধেই চাষিরা রুখে দাঁড়িয়েছিল। একে একে নীলকর সাহেবরা নিজেদের তল্পিতল্পা গুটিয়ে ফিরছিল নিজের দেশে। বারবাকপুর যার বর্তমান হল কালীগঞ্জ ব্লকের জুড়ানপুর। সেখানে নীল কুঠিরের দায়িত্বে ছিলেন হেগেল সাহেব। শোনা যায় তিনি অত্যাচারী ছিলেন না। সাধারণ মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকতেন। তাঁর কুঠিরের চাষি ও কর্মচারীরাও ছিল অত্যন্ত অনুগত। হেগেল সাহেব দেশে ফিরে যাওয়ার সময় দুর্গাদাসকে তাঁর সম্পত্তি দান করে যান।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মণ্ডল পরিবারে বরাবরই দুর্গা ও নারায়ণের পুজো করত। ১৭০৫ সাল থেকেই এই পরিবারে দেবীর আরাধনা হয়ে আসছে। তবে ১৮৭২ সালে বড় মন্দিরে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজো শুরু হয়। বংশের বধূ আহ্লাদিদেবী দেবীর কাছে পুত্র সন্তানের কামনা করেন। ১৮৭৫ সাথে আহ্লাদিদেবী পুত্র সন্তান লাভ করেন। দুর্গার নাম অনুসারে পুত্রের নাম রাখেন দুর্গাদাস। তাঁর আমলেই দুর্গাপুজোর জাঁকজমক বাড়ে পরিবারে। গ্রামে এলাহি আয়োজন করে বনেদি বাড়ির পুজো হয়ে আসছে ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে।
পরিবারের বর্তমান সদস্য গৌরব দাস বলেন, ১৭০৫ সালে বন্যায় ভেসে আসা এক বড় কড়িকাঠ দিয়ে পুজো শুরু হয়েছিল। পাশের নলিয়াপুরনিবাসী ভাস্কররা পট বানাত। ১৮৭২ সালে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজো করেন জমিদার গিন্নি আহ্লাদিদেবী। কয়েকবছর পর তিনি পুত্র সন্তান লাভ করেন। নাম রাখেন দুর্গাদাস। তাঁর আমলেই পুজোর জাঁকজমক বৃদ্ধি পায়। সেই থেকেই এই পুজো দুর্গাদাসের বাড়ির পুজো বলেই পরিচিত।