সকাল থেকেই জনজোয়ারে পঞ্চমীর মহানগরী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাসে বসে মা ছেলেকে একটু রাগী গলাতেই ফোনে বললেন, ‘কোথায় আছিস? আর কতক্ষণ লাগবে ফিরতে?’ ফোন রাখতেই রাগটুকু ঝেড়েপুঁছে সাফ। একগাল হেসেই বাবাকে বললেন, ‘এখন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে আছে। সেই সকাল ন’টায় বেরিয়েছে। বলছে, আরও দেরি হবে। ফোন কোরো না এখন।’ পুজো মানেই বাবা-মায়ের একটু ছাড়। পুজো মানেই সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকার অনুমতি। আর সেই ‘ছাড়পত্র’ হাতে নিয়ে ভিড়ের মাত্রা লাফিয়ে বেড়েছে তৃতীয়ার রাত থেকেই।
টালা থেকে একডালিয়া—গভীর রাতেই উপচে পড়েছিল ভিড়। সবচেয়ে বড় কথা, রাতের রেশ ধরে থাকল শারদীয়ার সকালও। কার্যত চতুর্থীর ভোর থেকেই আম জনতার ঠাকুর দেখা শুরু। পঞ্চমীতে ভোরবেলার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে সেই চিত্র। আলো ফুটতেই টালা প্রত্যয়, টালা বারোয়ারি, কাশী বোস লেন, হাতিবাগান সর্বজনীন, কুমোরটুলি পার্ক, জগত্ মুখার্জি পার্কের পথে শুধুই মানুষের মাথা। শুধু বারোয়ারি পুজো নয়, শোভাবাজার রাজবাড়িতেও চোখে পড়ল তরুণ-তরুণীদের ভিড়। ইউটিউবাররা বনেদি বাড়ির নকশাকে ব্যাকড্রপে রেখে দেদার ফোটোসেশন চালিয়ে গেলেন। উত্তর থেকে দক্ষিণের এই সামগ্রিক জনজোয়ারের ফাঁসে বেশকিছু জায়গায় থমকে গেল ট্রাফিক।
দাঁড়িয়ে থাকা বাস থেকেই দেখা গেল, যাত্রীরা নেমে মণ্ডপের পথে হাঁটা শুরু করেছেন। ক্লান্তি কোনওভাবেই গ্রাস করতে পারেনি বাঙালিকে। একডালিয়া থেকে সিংহী পার্ক, সেখান থেকে বালিগঞ্জ কালচারাল বা সমাজসেবী—গোটা পথ সেজেছে ঝলমলে রঙিন আলোয়। চারদিক থেকে আইসক্রিম, খাবারদাবারের দোকান থেকে উড়ে আসছে হাঁকডাক। এদিনই পথে কলকাতা পুলিসের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের দেখা গেল। তার সঙ্গে নীল পোশাকের ভলান্টিয়াররাও ট্রাফিক সামলাতে নেমে পড়েছেন।