আজও ধুনুচি নাচ ছাড়া অসম্পূর্ন মহানবমী নিশি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মহানবমী, উৎসবের শেষদিন। রাত কাটলেই মা ফিরে যাবেন। তাই হাজারও আনন্দের মধ্যেও নবমী মানেই চাপা কষ্ট, বিষণ্ণতা। একরাশ আনন্দ দিয়ে, বাকি দিনগুলোর মতোই নবমী শুরু হয়।
এ দিনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ সন্ধ্যার ধুনুচি নাচ। সন্ধ্যে বেলায় আরতীর মাধ্যমে শুরু হয় পুজো। দুর্গা পুজোয় সবচেয়ে মজার বিষয়টিই হল ধুনুচি নাচ। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ যেন পুজোকে আরও বেশি করে সার্থক করে তোলে। ধুনুচি নাচ সত্যিই একটি উপভোগের বিষয়। বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ধুনুচির আগুনকে ঘোরানো দেখতেও চমৎকার লাগে। এক টান টান অনুভূতির জন্ম দেয়।
সাবেকী বাঙালি পোশাকেই এই নাচ পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন প্যান্ডেলে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগীতাও হয়। আর প্রতিযোগীদের মাঝে মধুর বৈরীতা যেন পুজোর আমেজকে দ্বিগুণ করে দের। ঢাকিদের প্রতিযোগীতাও হয়। সুন্দর সুন্দর পুরস্কারও থাকে।
অন্যদিকে, প্রায় সবাই এদিন ঠাকুর দেখতে বের হন। যেন জনসমুদ্র বয়ে যায়। ঠাকুর দেখার জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। একটা বাসনা সব্বার মনে কাজ করে, যত পারো আনন্দ উপভোগ করে নাও। কারণ নবমীই উৎসবের শেষ নিশি।
১৪) সন্ধি পুজো আদপে কী? কেন সন্ধিক্ষণে দুর্গার স্নেহ-মমতা অদৃশ হয়ে যায়?
অষ্টমীর সন্ধ্যার আকর্ষণ হল সন্ধি পুজো। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধি ক্ষণে সন্ধি পুজো হয়৷ নিদিষ্ট করে বলতে গেলে, অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট মিলিয়ে, মোট ৪৮ মিনিট সময়ের মধ্যে সন্ধি পুজো সারতে হয়৷
এই পুজোয় একশো আটটা দ্বীপ দেওয়া হয়। বহু বনেদি বাড়িতে বন্দুক ছুঁড়ে সন্ধি পুজোর শুভারম্ভ করা হয়।
এই পুজোর বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। পুরাণ অনুসারে, অসুরদের সঙ্গে যুদ্ধের সময়ে দেবী অম্বিকার কপালে থাকা তৃতীয় নেত্র থেকে দেবী কালিকা প্রকট হয়েছিলেন ঠিক এই সময়কালেই। আবার এমনও বলা হয় যে, পরাক্রমী অসুর রক্তবীজের সমস্ত রক্ত এই সন্ধি ক্ষণেই দেবী চামুণ্ডা কালিকা খেয়ে ফেলেছিলেন।
পণ্ডিতরা বলেন, সন্ধিক্ষণ চলাকালীন মা দুর্গার অন্তর থেকে সমস্ত স্নেহ, মমতা অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই কারণেই সন্ধি পুজোর সময়ে দেবীর দৃষ্টি পথ পরিষ্কার রাখা হয়, চামুণ্ডা দুর্গার চোখের সামনে দাঁড়াতে নেই।
অনেক জায়গায় এই সন্ধি পুজোর সময় বলি দেওয়ার প্রথা রয়েছে। কোথাও ছাগল বলি হয়, কোথাও কোথাও কলা, আঁখ, চালকুমড়ো ইত্যাদি বলি দেওয়া হয়। সন্ধি পুজোর বলি দান অষ্টমী তিথিতে হয় না। সন্ধি পুজোর প্রথম দণ্ড অর্থাৎ ২৪ মিনিট পার হওয়ার পরই বলিদান হয়।