জীবনশৈলী বিভাগে ফিরে যান

রোজ ডিম খাওয়া কি আদৌ নিরাপদ?

October 14, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: যাঁরা মাঝবয়স পেরিয়ে গিয়েছেন, কিংবা সে দিকে এগোচ্ছেন, তাঁদের জন্য রোজ ডিম খাওয়া কি আদৌ নিরাপদ?

পুষ্টির কথা ভাবলে, ডিমে পাওয়া যায় ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি ১২। তা ছাড়া, একটি ডিমে কমবেশি ৭৫ ক্যালোরি, পাঁচ গ্রাম ফ্যাট, ছয় গ্রাম প্রোটিন, ৬৭ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ৭০ গ্রাম সোডিয়াম এবং ২১০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল রয়েছে। শেষটা শুনে আঁতকে উঠলেন তো?

কোনও ব্যক্তির রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কত জানতে করতে হয় লিপিড প্রোফাইল। লিপিড প্রোফাইলের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আছে। একটি হল এলডিএল কোলেস্টেরল, একটি এইচডিএল কোলেস্টেরল, আর একটি হল ট্রাইগ্লিসারাইডস। এর মধ্যে এলডিএল কোলেস্টেরলটি হল খারাপ কোলেস্টেরল। ট্রাইগ্লিসারাইডস এলডিএল কোলেস্টেরলের মতোই খারাপ এবং হার্টের রোগের সমস্যা করতে পারে। এছাড়া আছে এইচডিএল কোলেস্টেরল যা ভালো কোলেস্টরল এবং হার্টের সমস্যা দূরে রাখতে সাহায্য করে। যাঁদের হার্টের কোনও সমস্যা নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে এলডিএল কোলেস্টেরল বা খারাপ কোলেস্টেরল রাখতে হবে একশোর নীচে। যাঁদের হার্টের সমস্যা হচ্ছে বা একবার হার্ট অ্যাটাক ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে তাঁদের প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ক্ষেত্রে এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা ৭০ মিলিগ্রামের নীচে রাখা দরকার। ট্রাইগ্লিসারাইডস রাখতে হবে ১৫০-এর নীচে। তবে এইচডিএল কোলেস্টরলে হৃদয়বান্ধব। এইচডিএল-এর মাত্রা ৫০-এর উপরে থাকাই কাম্য।

ডিমের সাদা অংশে থাকে ভালো মাত্রায় প্রোটিন। এছাড়া থাকে ভিটামিন এ, বি১২, ভিটামিন ডি (কুসুমে), ভিটামিন ই, ভিটামিন ই৫, ফোলেট। এছাড়া আছে, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, আয়োডিন, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ। সেই কারণে ডিম আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তবে সমস্যা একটাই— তা হল ডিমের কুসুমে, থাকে ফ্যাট। একটি গোটা ডিমের কুসুমে যথেষ্ট মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকে।

এখন একটা বিষয় বুঝতে হবে। শুধু ডিম খেয়েই শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না। আরও অনেক খাদ্য আছে যার মধ্যেও ফ্যাটের মাত্রা থাকে যথেষ্ট বেশি। তেলে ভাজা হয়েছে এমন খাদ্য, মাখন, ঘি, চিজ, মেয়োনিজ, ডিমের মতো খাবার থেকেও আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল ঢোকে। আবার শরীরেও অন্দরেও প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরল তৈরি হয়। সুতরাং আমরা যদি ডিম, ভাজাভুজি, মাখন খাওয়া বন্ধও করে দিই, তাতেও আমাদের শরীরের ভিতরে কোলেস্টেরল উত্পাকদন বন্ধ হবে না। অতএব আমাদের খাবার খাওয়ার মধ্যে একটা ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে যাতে শরীরে কোলেস্টেরেলর আধিক্য না হয়। সোজা কথায় ডিম ত্যাগে লাভ নেই।

কোলেস্টেরল বেশি আছে, তবে হার্টের কোনও সমস্যা নেই এমন হলে দিনে একটা করে ডিম সেদ্ধ খেতেই পারেন। তবে ওমলেট খাওয়ার আগে সতর্ক হন। কারণ ডিম ভাজা করে খেলে তার মধ্যে বাড়তি তেল ঢোকে, সেই তেল শরীরে ঢুকে কোলেস্টেরলের বৃদ্ধির জটিলতা তৈরি করবে। যাঁদের ইতিমধ্যে হার্টের সমস্যা শুরু হয়েছে, তাঁদের উচিত একদিন অন্তর একটা সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ খাওয়া। আর সুস্থ ব্যক্তিরা দিনে একাধিক ডিম খেতে চাইলে, দ্বিতীর ডিম ও তার পরবর্তী ডিমগুলির কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ খান।

চেষ্টা করবেন ডিম সবসময় সেদ্ধ করে খেতে। কারণ ওমলেট বা ডিম ভাজা করে খেলে ডিমের সঙ্গে বাড়তি ফ্যাটও শরীরে ঢোকে। আমাদের শরীরেই কোলেস্টেরল উত্পসন্ন হয়। আর সেই কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের একটা প্রধান অংশ। সুতরাং কেবলমাত্র ডিম খাওয়া কমালেই হবে না। তার সঙ্গে শরীরের অন্দরে যে কোলেস্টেরল তৈরি হয় বা লিভারে যে কোলেস্টেরল জমে, সেটাও আমাদের কমানোর চেষ্টা করতে হবে। সব শেষে মুরগির ডিম অনেক ভালো। হাঁসের ডিমে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Heart Disease, #Eggs, #cholesterol

আরো দেখুন