নজরদারির সঙ্গে সাফাই, জোরকদমে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ পুলিশ ও পুরসভার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: তিথি অনুযায়ী, শনিবার দশমী ছিল। বনেদি বাড়ির পুজোর বিসর্জন হলেও, কলকাতার বেশিরভাগ বারোয়ারি পুজোর বিসর্জন হয়নি দশমীতে। রবিবার থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হয়। রবিবার থেকে ঘাটগুলিতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘাট সাফাইয়ে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বাড়তি সাফাইকর্মীও।
রবিবার একদিকে যেমন কলকাতার বড় মণ্ডপগুলিতে ভিড় সামলাতে ব্যস্ত ছিল পুলিশ, তেমনই প্রত্যেকটি ঘাটেও ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। জল পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী রয়েছে। বিকেলের পর থেকে বনেদি বাড়ি ও আবাসনের প্রতিমাগুলি নিরঞ্জন পর্ব শুরু হয়। জোয়ারের সময় অনেক পুজো কমিটির লোকজন বিসর্জন দিতে নামেন। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। জোয়ার-ভাটার সময় মাইকিং করে প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি ঘাটে বিপর্যয় মোকাবিলার টিম থাকছে। মাঝি ও ডুবুরি রাখা হচ্ছে।
নিমতলা, বাজেকদমতলা, গোয়ালিয়র ঘাট ও বিচালি ঘাটে চারটি বোট থাকছে, যাতে জলে প্রতিমা ফেলার পর কাঠামোগুলি সরিয়ে ফেলা যায়। দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে উদ্ধার করা যায়, সেজন্য ডিসি কমব্যাটের নেতৃত্বে উদ্ধারকারী টিম থাকছে। ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ ঘাট, যেখান থেকে বেশিরভাগ প্রতিমা বিসর্জন হয়, সেখানে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা। জল পুলিশের রেসকিউ টিম তৈরি থাকছে। থাকছেন পাঁচজন করে ডুবুরি।
বাজে কদমতলা ঘাটে বিশেষ লঞ্চে থাকছেন ৬ জন ডুবুরি। এছাড়াও বাগবাজার ঘাট, বাজে কদমতলা ঘাট, গোয়ালিয়র ঘাট ও নিমতলা ঘাটে মোতায়েন থাকছে ডিএমজির বিশেষ বাহিনী। নজরদারির জন্য সাতটি ঘাটে থাকছে ওয়াচ টাওয়ার। প্রত্যেকটি ঘাটে একজন করে ইন্সপেক্টরের অধীনে মোতায়েন থাকছে পুলিশের টিম, যার নজরদারি করবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ডিসিরা। ঘাটগুলিতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে ঘাট সাফাইয়ের কাজে পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করবে পুলিশও।
বিসর্জনের শোভাযাত্রায় নিষিদ্ধ ডিজে। কোনও পুজো কমিটি যাতে ডিজে না বাজায়, তাতে কড়া নজর রাখবেন কলকাতার ২৩৮টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পিকেটে থাকা পুলিশকর্মী ও আধিকারিকরা। কেউ যদি ডিজে বাজায় বা কোনও রকম কোনও অভিযোগ পুলিশের কাছে আসে, সঙ্গে সঙ্গে সেই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। আয়োজকদের গ্রেপ্তারিও করা হতে পারে। বিসর্জন পর্ব চলার জন্য সকাল আটটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত কলকাতায় যেকোনও মালবাহী গাড়ির যাতায়াত নিষিদ্ধ। বিকেল তিনটের পর থেকে শহরের ৫৫টি রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
ঘাটে ঘাটে পুরসভার সাফাইকর্মীরাও নিযুক্ত রয়েছেন। গঙ্গার দূষণ রুখতে পুজোর সামগ্রী, ফুল, পাতা জলে ফেলা যাবে না। প্রতিমা জলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেন দিয়ে তা তুলে নেওয়া হচ্ছে। বিসর্জনের পর প্রতিমাগুলি পাড় থেকে তুলে নিয়ে যাবে পুরসভার সাফাইকর্মীরা। শহরতলির ঘাটে বিসর্জনের পর প্রতিমা জলে ভেসে এসে কলকাতায় বিপত্তি ঘটায়। বিসর্জনের আবর্জনা ভেসে এসে জলের পাইপলাইনের মুখ বন্ধ করে দেয়। তাই সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।