দার্জিলিংয়ে দেশবন্ধুর স্মৃতিবিজরিত ভবনের সংস্কারকাজ সম্পূর্ণ, শীঘ্রই মিলবে ঘুরে দেখার সুযোগ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পর্যটকদের জন্য সুখবর, দার্জিলিং পাহাড়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্মৃতিবিজরিত ভবনের সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভবন ও মিউজিয়াম ফের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা জানান, ভবনটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে চালু করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের দেওয়া ২৯ লক্ষ টাকায় জেলা প্রশাসন সংস্কার কাজ করেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই, দার্জিলিংয়ের ম্যাল রোডের কাছে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ভবনটির সংস্কারের দাবি করা হচ্ছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কার্যত ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছিল ভবনটি। দেওয়ালে গজিয়ে উঠেছিল আগাছা। দেওয়াল ও ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছিল। দরজা, জানালার অবস্থাও ছিল শোচনীয়। বিপজ্জনক হয়ে পড়েছিল বাড়িটি। প্রায় দু’বছর ধরে তা বন্ধ ছিল। সংস্কারে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। প্রাচীন কাঠামো বজায় রেখে ভবনটির আমূল সংস্কার করা হয়েছে।
বছর খানেক আগে ভবনটির সংস্কারের প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্য এই প্রকল্পের জন্য ২৯ লক্ষ ৩ হাজার টাকা বরাদ্দ করে। এরপরই প্রস্তাবিত প্রকল্প রূপায়ণের কাজে হাত দেওয়া হয়। পুজোর আগেই ভবনটি চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির সময় গাছ পড়ে ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভবনের একাংশ। সেই অংশের মেরামতি কাজও প্রায় শেষ। কিছুদিনের মধ্যেই উন্নয়ন ও পরিকল্পনা দপ্তর ভবনটিকে মহকুমা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবে। আগামী মাসের মধ্যেই সেটি ফের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে।
ভবনটি ছিল প্রয়াত আইনজীবী নৃপেন্দ্রনারায়ণ সরকারের। তিনি একদা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। এই ভবনের দোতলায় থাকতেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। ১৯২৫ সালের ১৬ জুন ওই ভবনেই মৃত্যু হয় দেশবন্ধুর। ১৯৫৩ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মেমোরিয়াল সোসাইটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে সোসাইটির কাছে ভবনটি দান করেন নৃপেন্দ্রনারায়ণবাবুর পরিবার। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মিউজিয়াম চালু হয়।
দোতলা ভবনের ঘরগুলির সংস্কার করা হয়েছে। তাতে রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। ঘর ও বারান্দায় পর্যাপ্ত আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বাগানে বাতিস্তম্ভ বসানো হয়েছে। চিত্তরঞ্জন দাশ যে ঘরটিতে থাকতেন তার বিছানা, চেয়ার, টেবিল সবকিছুই সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাঁর ব্যবহৃত বেশকিছু সামগ্রী ও পোশাক সংরক্ষিত রয়েছে। সাজিয়ে তোলা হয়েছে মিউজিয়ামটিও।