কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামের মুখোপাধ্যায় বাড়ির কালীপুজো পড়ল তিনশো বছরে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কাঁকসার কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম প্রাচীন পুজো হল রাজকুসুম গ্রামের মুখোপাধ্যায় বাড়ির কালীপুজো। এই পুজোর বয়স ৩০০ বছরেরও বেশি। মুখোপাধ্যায় পরিবারের পূর্বপুরুষ রামকুমার মুখোপাধ্যায় পুজো শুরু করেছিলেন। আগে ছাগ বলির প্রথা থাকলেও এখন পেল্লাই সাইজের কদমা বলি দেওয়া হয় পুজোতে।
পরপর দু’বার বলির জন্য নিয়ে আসা ছাগ মারা যায়। পরিবারের সদস্য অন্নদাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্বপ্নে দেখেন, দেবী ছাগ বলি করতে নিষেধ করছেন। তখন মলানদিঘির ব্রাহ্মণদের কাছে বিধান আনতে গেলে ব্রাহ্মণরা বলি না দেওয়ার পরামর্শ দেন। সেবারে মণ্ডা বলি দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে কুমড়ো আকারের কদমা নিয়ে আসা হয় মানকর থেকে। এখনও সেই রীতি পালন করে আসছেন তাঁরা।
আগে নিশিপুজো থাকলেও বর্তমানে সন্ধি পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রীতি মেনে পুজোর দিন সাড়ে সাত কেজি চালের নৈবেদ্য নিবেদন করতে হয় দেবীকে। ভোগে সুজি নিবেদন করা হয়। পুজোর পরের দিন বিসর্জন হয় দেবীর।
অন্যদিকে, রাজকুসুম গ্রামের বড়কালীর পুজো শুরু করেছিলেন ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্রহ্মযজ্ঞের রীতি রয়েছে পুজোয়। কালীপুজোর আগে হরগৌরীর পুজো হয়। রাত ১০টায় হরগৌরীর পুজোয় বসেন পুরোহিত। পুজো শেষ করে শুরু হয় বড়কালীর আরাধনা। দেবীকে ৪০ কেজি চালের নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। কালীপুজোয় পুজো ও বলিদানের পর পাঁচজন ব্রাহ্মণকে ভোগ প্রথম নিবেদন করা হয়। ব্রাহ্মণদের পর তা মাকালীকে নিবেদন করা হয়। সাধারণ মানুষ সেই প্রসাদ পান। বর্তমানে যেখানে মন্দির আগে সেটি শ্মশান ছিল। গ্রামের রীতি প্রথমে বড়কালীর ছাগ বলি হবে। তারপর সেই একই খাড়ায় গ্রামের অন্যান্য পুজোর ছাগ বলি হবে। আজও এই পুজো দেখতে দূর থেকে বহু মানুষ আসেন।