ব্রিজভূষণের কুকীর্তি উঠে এল সাক্ষী মালিকের আত্মজীবনীতে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভারতের প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত একমাত্র মহিলা কুস্তিগির হিসাবে অলিম্পিক্সে পদক জিতে ইতিহাস তৈরি করেছেন। মাঠের বাইরেও তাঁর লড়াই কোনও অংশে কম নয়। দেশের এক শক্তিশালী রাজনীতিবিদ তথা একটি ‘সিস্টেম’-এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন তিনি।
ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের তৎকালীন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন কুস্তিগীররা। কেন এই প্রতিবাদ? ব্রিজভূষণের কুকীর্তির অনেকটাই আড়ালে ছিল এতদিন। এবার সেই ঘটনাই সামনে আনলেন ওলিম্পিক্সে পদকজয়ী সাক্ষী মালিক। সৌজন্যে সাক্ষীর আত্মজীবনী ‘উইটনেস’। সেখানেই ধরা পড়েছে ২০১২ সালের একটি ঘটনা। সাক্ষী জানিয়েছেন, কাজাকস্তানের আলমাটিতে সেবার বসেছিল এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ। ৬৩ কেজি বিভাগে সেবার স্বর্ণপদক জেতেন সাক্ষী। এটাই ছিল তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক পদক। সেই পদক জয়ের পর পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে ব্রিজভূষণের ঘরে গিয়েছিলেন সাক্ষী। সাক্ষীর বাবা-মাকে জানতেন ব্রিজভূষণ। পারিবারিক সম্পর্কের কারণে ব্রিজভূষণকে কখনও সন্দেহ করেননি সাক্ষী। সেটা ছিল চরম ভুল।
আন্দ্রে আগাসি, ফিল নাইট, রাজকুমার হ্যারির আত্মজীবনী লেখা লেখক তথা পুলিৎজ়ার পুরস্কার জয়ী সাংবাদিক জেআর মোয়েরিঙ্গার গত বছর জানিয়েছিলেন, তিনি হ্যারির আত্মজীবনী লিখতে অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর মতে, এখনকার আত্মজীবনী মানেই সেই পুরনো গল্প। যাঁর জীবনী তিনি কী করেছেন, কত ভাল ছিলেন, কী কী সাফল্য অর্জন করেছেন, কতটা কঠিন ছিল সে সব— এ সবই বস্তাপচা কাহিনি। মোয়েরিঙ্গার আত্মজীবনীর সংজ্ঞা ছয় শব্দে দিয়েছিলেন, ‘আ স্টোরি, কার্ভড ফ্রম আ লাইফ’। একটা গল্প, যা জীবন থেকে তৈরি হয়।
ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের আত্মজীবনী এখনও সেই ধারা থেকে বেরোতে পারেনি। এখন সেখানে সেই কথাগুলোই লেখা হয়, যা তিনি প্রকাশ্যে বহু বার বলেছেন। বেশির ভাগই আত্মকেন্দ্রিক। আমিত্বে ভরা। ব্যতিক্রমও রয়েছে। অলিম্পিক্সে সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রার আত্মজীবনী ‘আ শট অ্যাট হিস্ট্রি’ বা রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ‘আই হ্যাভ দ্য স্ট্রিটস’ উল্লেখ্য। সেই তালিকায় সংযোজিত হতেই পারে সাক্ষী মালিকের ‘উইটনেস’।