মাদারিহাট আসনটি ধরে রাখা নিয়ে চিন্তায় বিজেপি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আগামী ১৩ নভেম্বর বাংলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন রয়েছে। তাতে বিজেপি বেশি ভাল ফল করার আশা করছিল মাদারিহাটে। কারণ এটা দু’বারের জেতা আসন। কিন্তু সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দিল গোর্খারা। আর তাতেই এখন সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। মাদারিহাট ছাড়া বাকি পাঁচটি আসন জেতার ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদী নন বিজেপি নেতারা। কারণ সেখানে তাদের সংগঠন অত্যন্ত দুর্বল। তবে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের থেকে ভাল। তাই মাদারিহাট নিয়ে বেশি আশা করছিলেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। কারণ গোর্খাদের সমর্থনে এখানে একজন নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।
পামাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রটিও। সেখানে বিজেপি প্রার্থী করেছে ২০০৩ সালের দলগাঁও গণহত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা মুখ্য চরিত্র তথা তৎকালীন সিটু নেতা তারকেশ্বর লোহারের ছেলে রাহুল লোহারকে। পদ্মের আশা রাহুলের হাত ধরে চা-বাগানে থাকা বাম ভোট ভিড়বে পদ্মের বনে। কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে দেখা যাচ্ছে, তারকেশ্বরের কুকীর্তিই বিজেপির সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
২০০৩ সালে মাদারিহাটের দলগাঁও চা বাগানে কর্মী নিয়োগের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তৎকালীন সিটু নেতা তারকেশ্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ১৯জনকে জলজ্যান্ত আগুনে পুড়িয়ে মেরে দিয়েছিল। যদিও তারকেশ্বর নিজে বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান। তবে ভিটেছাড়া হতে হয় লোহার পরিবারকে। এরপর থেকে বীরপাড়া থানার শিশুঝুমরায় রয়েছে পরিবারটি। রাহুলও প্রথমে এসএফআই এবং পরে সিপিএম করতেন। ২০১৬ সালে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। তিনি প্রার্থী হওয়ার পর তাঁর প্রয়াত বাবার সময়কার ঘটনা নিয়ে ফের চর্চা শুরু হওয়ায় এখন রীতিমত মুখ লুকিয়ে পালিয়ে বেড়াবার উপক্রম হয়েছে তাঁর।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসন বড় ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা। এখন তিনি সাংসদ। তাই এই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। সেখানে গোর্খাদের পক্ষ থেকে এমন খেলে দেওয়ায় উত্তরের এই আসনটিও কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। আর যদি ভোট কাটাকাটিতে মাদারিহাট আসনটি বিজেপির হাত থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে ৬–০ নিরিখে পরাজিত হবে তারা বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস।