রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির পরিষেবার উন্নতিসাধনে ৬টি ‘পরামর্শ’ দিয়ে মুখ্যসচিবকে ইমেলে জুনিয়র ডাক্তারদের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে একটি ইমেল করা হয়েছে। ইমেলে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির পরিষেবার উন্নতিসাধনে ৬টি ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছে তাঁদের তরফে। উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে অনশন তুলে নিলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাই বলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শনিবার গণকনভেনশনের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকেই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা হতে পারে।
ইমেলে লেখা হয়েছে, “মাননীয় মুখ্যসচিব আপনি সম্ভবত ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’-র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে ব্যস্ত আছেন। আমরাও প্রস্তুত রয়েছি। ২১ অক্টোবরের আলোচনার ভিত্তিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আমরা লিখতে বাধ্য হচ্ছি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে আমাদের মনে হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার রাতে নবান্নেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, সেই সময়ই জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে এই মেল গেছে।
মোট ছ’টি বিষয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল—
১। কেন্দ্রীয় ভাবে সব সরকারি হাসপাতালে খালি শয্যার নজরদারি শুরু করতে হবে। রাজ্য সরকার পাইলট প্রজেক্ট শুরু করলেও তা নিয়ে খুশ নন ডাক্তারেরা। খালি শয্যার উপর নজরদারি ঠিক না হলে ‘রেফারেল’ পদ্ধতি কাজ করবে না। এক মাসের মধ্যে সেই ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
২। দুর্নীতি রোধ করতে এবং হুমকি সংস্কৃতি বন্ধ করতে প্রতি ঘণ্টায় সমস্ত সরকারি হাসপাতালে খালি শয্যার সংখ্যা জানাতে হবে। হাসপাতালের কার্যকলাপ মসৃণ ভাবে চালাতে এবং রোগীর কল্যাণে এই ব্যবস্থা আবশ্যিক।
৩। হাসপাতালগুলির ধারণ ক্ষমতা কেমন সেই নিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সরকারকে মূল্যায়ন করতে হবে। তার উপর ভিত্তি করে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ করতে হবে।
৪। কেন্দ্রীয় ‘রেফারেল’ পদ্ধতি (সিআরএস)-র খামতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তারেরা। সিআরএস দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এক, রেফার করা হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা রয়েছে কি না। দুই, রেফার করা রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো, ওষুধ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন তা ওই হাসপাতালে রয়েছে কি না। ডাক্তারদের পরামর্শ, রেফার করা হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা আছে কি না, জানলেই হবে না। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে ওই চিকিৎসার পরিকাঠামো আছে কি না, সেটাও সিস্টেমে থাকতে হবে। কোনও রোগীকে রেফার করা হলে এই উভয় শর্তই পূরণ করতে হবে। কোনও একটির খামতি থাকলে রোগীর জন্য বিকল্প পরিষেবার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। কেন্দ্রীয় ‘রেফারেল’ পদ্ধতি পরিচালনার জন্য ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করতে হবে।
৬। রেফার করা হাসপাতালে কোনও পরিষেবা উপলব্ধ না হলে কোথায় সেই পরিষেবা পাওয়া যেতে পারে সেই সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্য বোর্ড টাঙাতে হবে। এর ফলে রোগীর পরিবার বিভ্রান্তি এড়াতে পারবেন।