‘ডানা’ পরবর্তী ১৪৮টি ঘূর্ণিঝড়ের নামও ঠিক করে রাখা হয়েছে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র নামকরণ করেছিল কাতার। এই ‘ডানা’ নামের অর্থ মুক্ত বা স্বাধীনতা। সাগরে নিম্নচাপের সময় বাতাসের প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত বায়ুমণ্ডলীয় উত্তাল অবস্থাকে সংক্ষেপে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। বাতাসের এই একটানা ঘূর্ণায়মান গতি যখন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছায়, তখনই এর নামকরণ করা হয়। আটলান্টিক মহাসাগর ও এর আশপাশের অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটারে উঠে গেলে নিম্নচাপ ঝড়ে পরিণত হয়। আর এ সময়ই ঘূর্ণিঝড়টিকে একটি নাম দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
‘ডানা’ পরবর্তী ১৪৮টি ঘূর্ণিঝড়ের নামও ঠিক করে রাখা হয়েছে। বছর ছয়েক আগেই এই নামগুলিতে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লুএমও)। উত্তর ভারত মহাসাগর এলাকার ঘূর্ণিঝড়গুলির নামকরণের কোনও ব্যবস্থা ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আগে ছিল না। ১৯৯৯ সালে যে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার পর হাজার দশেকের মানুষের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, তার কোনও নির্দিষ্ট নাম না ছিল না। সেটি অবশ্য ওড়িশা সুপার সাইক্লোন নামে পরিচিত হয়েছে।
এর আগেও বেশকিছু বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ে ভারত, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে প্রচুর প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেগুলিরও কোনও নামকরণ করা হয়নি। ২০০৪-এর সেপ্টেম্বরে ভারতসহ ৮টি দেশ নামকরণের প্যানেলে যুক্ত হয়। ওই দেশগুলির দেওয়া নামের তালিকা শেষ ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ‘উম-পুন’। অতিতীব্র মাত্রার ওই ঘূর্ণিঝড়টি ২০২০ সালের মে মাসে বাংলার সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়ে। তাতে বহু মানুষের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তার আগে ২০১৮ সালে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের নতুন একটি তালিকা তৈরি করে ফেলা হয়েছিল বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অনুমোদন নিয়ে। নতুন নামকরণের প্যানেলে ৫টি নতুন দেশ যুক্ত হয়। এই দেশগুলি হল—কাতার, সৌদি আরব, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও ইরান। প্রতি দেশ মোট ১৩টি করে নাম দেয়। দেশগুলির তালিকা অনুযায়ী, তাদের দেওয়া একটি করে নাম পরপর আসে। তালিকায় প্রথমে আছে বাংলাদেশ। শেষে আছে ইয়েমেন। সব দেশের দেওয়া একটি করে নাম শেষ হয়ে গেলে আবার তালিকার প্রথম দেশটির দেওয়া নাম আসে। কোনও দেশ চাইলে ইচ্ছামতো যেকোনও নাম দিতে পারে না। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই নামকরণ করতে হয়।