পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

সোনামুখীর মাই তো কালীর লৌকিক কাহিনি আজও ফেরে লোকের মুখে মুখে

October 28, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৭৪২সাল নাগাদ মারাঠা সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে বর্গিদের একটি দল লুটপাটের জন্য বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখীতে আসে। বাদ্য বাজনা সহ হর হর বোম বোম শব্দ করতে করতে সোনামুখীর রানিরবাজারে জড়ো হয়। তখন ওই এলাকাটি ঝোপঝাড়ে ভর্তি ছিল। তারই মাঝে একটি ছোট কালী মন্দির ছিল। দিনের বেলাতেই সাধারণ মানুষ নির্জন ওই জায়গায় আসতে ভয় পেতেন। সন্ধ্যার মুহূর্তে বর্গিদের বাজনার আওয়াজ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে যে যার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন।

এমন সময় এক বৃদ্ধ পুরোহিত দেবীর মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাতে আসেন। মন্দিরের সামনে থাকা হাঁড়িকাঠের সামনে মাথা নিচু করে প্রণাম করার সময় ঝোপের আড়াল থেকে মারাঠা সর্দার তার খড়্গ উঁচিয়ে পুরোহিতের গলায় কোপ মারতে উদ্যত হয়। কিন্তু কোনও এক শক্তির বলে তার খড়্গ নীচে নামেনি। পিছন থেকে কেউ যেন তা টেনে ধরে রাখে। শুধু তাই নয়। বর্গি নেতা দৃষ্টি শক্তি হারান। তখন সেনাপতি তার সঙ্গীদের বলেন, ওই বৃদ্ধকে হত্যা না করে আটকে রাখতে। সকলে মিলে সর্দারের অন্ধত্ব দূর করার জন্য পুরোহিতকে অনুরোধ করেন। তারপর তিনি মন্দিরে মায়ের ঘট থেকে শান্তিজল এনে সর্দারের চোখে ছিটিয়ে দেওয়ায় দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসে।

তখন সর্দার তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন? এখানে কী কোনও দেবতা আছেন? পুরোহিত বলেন, এখানে মা কালী আছেন। তা শুনে সর্দার বলেন, মা-ই-তো কালী হ্যায়। তারপর হাতের খড়্গটি পুরোহিতকে দিয়ে বলেন, এখন থেকে এই খড়্গ দিয়ে বলি করবেন। আমরা আর এখানে লুটপাট করব না। তারপর তারা মায়ের নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে সোনামুখী ছেড়ে চলে যায়। ওই ঘটনা থেকেই সোনামুখীর বাসিন্দারা আজও বিশ্বাস করেন, মাই তো কালীর মাহাত্ম্যের কারণেই সেদিন বর্গি হানা থেকে সোনামুখীর বাসিন্দারা বেঁচে গিয়েছিলেন।

পুজো কমিটির সভাপতি তথা সোনামুখী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মাই তো কালীর মাহাত্ম্যের কারণে সারাবছরই ভক্তরা পুজো দিতে আসেন। কালীপুজোর সময় ভক্তদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শনার্থীরাও আসেন। বিসর্জনের শোভাযাত্রা দেখতে কার্যত দর্শনার্থীদের ঢল নামে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#kali puja, #Sonamukhi, #Kali Temple

আরো দেখুন