২০২৬ সালে শুরু ডিলিমিটেশন, মোদীর ভোটের অঙ্কেই আসন বিন্যাস?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন হবে কি না, এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ২০২৯ সালের লোকসভা ভোটে দু’টি পরিবর্তন নিয়ে কোনও সংশয় নেই। প্রথমত ডিলিমিটেশনের (আসন পুনর্বিন্যাস) পর বর্ধিত লোকসভা আসনের ভিত্তিতেই হবে ওই নির্বাচন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের অভিমত, আসন সংখ্যা হতে চলেছে অন্তত ৭৮৮। আর একই সঙ্গে ২০২৩ সালে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের পর নরেন্দ্র মোদী যে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েছিলেন, তার প্রথম বাস্তবায়ন হবে ওই ২০২৯ সালেই।
যদিও ২০২৩ সালেই প্রশ্ন উঠেছিল, যতক্ষণ না দেশে লোকসভা ও বিধানসভা আসনের পুনর্বিন্যাস হচ্ছে, লোকসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত রূপায়ণ হবে কীভাবে? ২০২৬ সালের আগে ডিলিমিটেশন হওয়ার সম্ভাবনাই ছিল না। তাহলে হঠাৎ এত আগে, ২০২৩ সালে মোদী কেন মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়ে প্রচার শুরু করলেন?
সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০২৫ সালে অবশেষে সেন্সাসের কাজ শুরু হবে। সেন্সাসের পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার পর, ২০২৬ সালেই গঠন হবে ডিলিমিটেশন কমিশন। তাদের কাজ হবে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধিহার এবং মোট জনসংখ্যা সহ কয়েকটি মাপকাঠি অনুযায়ী লোকসভা ও বিধানসভা আসনের সীমানা পুনবির্ন্যাস। ওই বর্ধিত লোকসভা আসনের ভিত্তিতেই ২০২৯ সালে হবে সাধারণ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য শুধু বর্ধিত লোকসভা আসনের ভিত্তিতে ভোটের অঙ্কে থেমে থাকতে চাইছেন না। তাঁর টার্গেট ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন।
এখানেই অঙ্ক শুরু মোদীর। কারণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের ধারণা, দক্ষিণ ভারতে লোকসভা আসন কমে যেতে পারে। পক্ষান্তরে বাড়বে উত্তর ও পূর্ব ভারতে। কারণ দক্ষিণ ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে গিয়েছে। কমেনি উত্তরে। দক্ষিণে এমনিতেই বিজেপির ভিত মজবুত নয়। সেখানে আসন কমলে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের লাভই বেশি। কিন্তু মোদীর উদ্বেগ বাড়িয়েছে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের ফল। শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত বহু রাজ্যেই ধস নেমেছে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে। আসন পুনর্বিন্যাস হলে গেরুয়া শিবির অঙ্ক কষবেই। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্যই হবে বাংলা এবং উত্তরপ্রদেশ। এই দু’টি রাজ্যের আসন বাড়িয়ে তাদের দু’ভাগে ভেঙে দেওয়ার ফর্মুলা কাজে লাগানো হলেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। দুর্বল আসনের পাশের কেন্দ্রেই যদি মজবুত ভোটব্যাঙ্ক থাকে, তাহলে দু’টি জুড়ে গেলে ধাক্কা লাগবে না গেরুয়া শিবিরে। এই আসন বিন্যাসই তাই ভোটের অঙ্ক হতে চলেছে মোদীর।