দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

রামকৃষ্ণর মাসিকে চেনেন? জানুন বরাহনগরের ব্রহ্মময়ী কালী মন্দিরের ইতিহাস

October 31, 2024 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বরাহনগরের কুঠিঘাট এলাকায় রয়েছে ব্রহ্মময়ী কালী মন্দির, এখানকার মা ব্রহ্মময়ী হলেন রামকৃষ্ণর মাসি অর্থাৎ ভাবতারিণীর ভগিনী। যদিও মন্দিরটি প্রামাণিক কালী বাড়ি নামে পরিচিত। ১২৫৯ বঙ্গাব্দে, ১৮৫৩ সালে মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। দে-প্রামাণিক পরিবারের দুই সদস্য দুর্গাপ্রসাদ দে প্রামাণিক ও রামগোপাল দে প্রামাণিক মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সম্পর্কে তাঁরা ছিলেন কাকা ও ভাইপো। দে প্রামাণিকদের আদি বাড়ি ছিল বর্ধমানের পুলিনপুর গ্রামে। সেই পরিবারের কুলপুরোহিত ছিলেন বড়ালরা। তারাই পাঁচ পুরুষ ধরে ব্রহ্মময়ীর পুজো করে চলেছেন। দে প্রামাণিকরা ব্যবসায়ী পরিবার, এক সময় ব্যবসাবাণিজ্যের কারণে তারা বর্মায় থাকতেন। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ শুরু হলে, দে প্রামাণিকরা দেশে ফিরে আসেন। তারপরই দে প্রামণিক পরিবারের এক পুরুষ জনৈক কামদেব দে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। তখন থেকেই দে প্রামাণিক পরিবার কলকাতায় স্থায়ী ভাবে থাকা শুরু করে। কামদেব দে-র বংশধর রামগোপাল দে ও দুর্গাপ্রসাদ দে-ই ব্রহ্মময়ীর মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা।

মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী দক্ষিণা কালী। শ্রীরামকৃষ্ণ এই মন্দিরে কয়েকবার এসেছেন। তিনি ব্রহ্মময়ী কালী মাসি বলে ডাকতেন। দক্ষিণেশ্বরের মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৫৫ সালে, অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর মন্দির প্রতিষ্ঠার দু-বছর আগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রহ্মময়ী মন্দিরটি নবরত্ন মন্দির। ব্রহ্মময়ী মন্দির উঁচু ভিত্তিবেদির স্থাপিত। মন্দিরটি দক্ষিণমুখী। মন্দিরের সামনের ফটক পেরিয়ে ঢুকলেই দু’পাশে দুটি ছোট শিব মন্দির রয়েছে। আরও একটু এগোলেই চোখে পড়বে দু’পাশে আরও দুটি বড় শিব মন্দির রয়েছে। শিব মন্দিরগুলি বাংলার আটচালা শৈলীতে নির্মিত।

মন্দিরের বিগ্রহ কষ্টিপাথরের, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার অন্তর্গত দাঁইহাটের বিখ্যাত নবীন ভাস্কর মূর্তিটি নির্মাণ করেন। তিনিই মা ভবতারিনীর মন্দির বানিয়েছিলেন। ব্রহ্মময়ীর মন্দিরে নিত্য পুজো হয়। মাঘী পূর্ণিমায় প্রতিষ্ঠা তিথিতে বিশেষ পুজো হয়। দীপাবলীতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। মন্দিরের একটি প্রথা রয়েছে। কালী পুজোর দিন অমাবস্যা তিথি পড়ার পর দে-প্রামাণিকদের কোনও শরিকের বাড়িতে সবার আগে লক্ষ্মী পুজো হয়, তারপর মা ব্রহ্মাময়ী মন্দিরে কালী পুজো শুরু হয়। মন্দিরে এখন আর পশুবলি হয় না। বর্তমানে মন্দিরটি শ্রীশ্রীব্রহ্মময়ী ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Ramkrishna, #Brahmamoyee Kali Mandir

আরো দেখুন