জনপ্লাবন বারাসতে, তীব্র যানজট দুপুর থেকেই, নাজেহাল পুলিশ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রতি বছরের মতো এবারও বারাসতে কালীপুজো দেখতে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। বৃহস্পতিবার কালীপুজো তিথি শুরু হয় দুপুরের পর। তাই অনেকে পুজো শেষ করে বারাসতে ঠাকুর দেখতে আসতে পারেননি সেদিন। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরের চিত্র দেখেই বোঝা যাচ্ছিল জনস্রোত ভেঙে পড়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। হলও তাই। সন্ধ্যা গড়াতেই দর্শনার্থীদের ঢল বারাসতে। মণ্ডপের আলো মেখে মানুষ স্রোতের মতো ভাসল। পিছিয়ে রইল না মধ্যমগ্রামও।
লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে বারাসতে তীব্র যানজট ভরদুপুরেই। ভিড় সামাল দিতে নাজেহাল পুলিস। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে যান নিয়ন্ত্রণ সহ একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছিল পুলিস। কিন্তু দিনের শেষে সেই পুলিসের বিরুদ্ধেই উঠল অতিসক্রিয়তার অভিযোগ। সাধারণ দর্শনার্থী থেকে বাইক নিয়ে যাতায়াত করা ফুড ডেলিভারি বয়, ভুগলেন সবাই। অভিযোগ উঠল, পুলিসের অতিরিক্ত কড়াকড়ির কারণে কালীপুজোর রাতে বারাসত শহরজুড়ে ‘কৃত্রিম যানজট’ তৈরি হয়েছিল। যান নিয়ন্ত্রণ করতে স্থানীয় প্রাইভেট কার, বাইককে ‘ভেহিকল পাস’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, পুলিস নিজেই সেই পাসযুক্ত গাড়ি আটকেছে। কখনও আবার পুলিসের সঙ্গে তুমুল তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তা।
নবপল্লি অ্যাসোসিয়েশন থেকে আমরা সবাই ক্লাব, কেএনসি রেজিমেন্ট থেকে শুরু করে একাধিক পুজো ঘিরে ঠাসা ভিড়। মণ্ডপের প্রবেশপথ শক্তপোক্ত বাঁশ, শালবল্লা এবং গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড করার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ মেনে তা কার্যকর করে কমিটি। দুপুর থেকেই ভিড় জমছিল শুক্রবার। বিকেল হতেই জন সমাগম জমাট বাঁধে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে যশোর রোড, টাকি রোড থেকে কেএনসি রোড, নবপল্লি সার্কুলার রোড থেকে শহরের সমস্ত অলিগলিতেও ঠাসা ভিড়। বিকেল পর্যন্ত রাস্তায় নো এন্ট্রি না থাকায় ব্যাপক যানজট। গাড়ির জট, দর্শনার্থীদের ঢল সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেয়েছে ট্রাফিক পুলিস।
ডাকবাংলো মোড় থেকে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে শহরের অধিকাংশ বড় বাজেটের পুজোগুলি হয়। ফলে যশোর রোড, টাকি রোডে ভিড় হলেও জনস্রোত কার্যত ছিল ১২ নম্বর জাতীয় সড়কেই। পরিস্থিতি সামলাতে দুপুরে রাস্তায় নামেন পুলিস সুপার, অতিরিক্ত পুলিস সুপার। বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শহরের পাঁচটি পয়েন্টে নো এন্ট্রি করে দেওয়া হয়। বাড়ানো হয় ফোর্সের সংখ্যা। বারাসতের ডাকবাংলো থেকে সন্ধানী, তরুছায়া, সাউথ ভাটরাপল্লি, রেজিমেন্ট, নবপল্লি অ্যাসোসিয়েশন, ছাত্রদলের মণ্ডপ ছিল ভিড়ে ভিড়াক্কার। একই ছবি টাকি রোডে। শহরের কোন কোন প্যান্ডেলে কত সংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় হয়েছে তা জানতে শহরের একাধিক জায়গায় এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে মনিটারিং করেছে পুলিস। বারাসত শহরের প্রাণকেন্দ্র কলোনি মোড়ের কাছেই নবপল্লি অ্যাসোসিয়েশনের পূজো। প্রেম মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছিল তারা। দেখতে দুপুর থেকে জমজমাট ভিড়।