ISL: ন’জনে খেলেও মহমেডানের বিরুদ্ধে ড্র করল ইস্টবেঙ্গল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ডার্বিতে একাধিকবার রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শনিবার আইএসএল-এ ‘মিনি ডার্বি’ ম্যাচেও বিতর্কে থাকলেন রেফারি হরিশ কুন্ডু। যদিও দেশের অন্যতম সেরা রেফারি হিসাবে বিবেচনা করা হয় ৩২ বছরের হরিশকে।
এদিন যুবভারতীতে মুখোমুখি হয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং মহমেডান এসসি। ম্যাচের ২৯ মিনিটের মাথায় লাল-হলুদের দুই ফুটবলারকে লাল কার্ড দেখিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন এ দিনের ম্যাচের রেফারি হরিশ। শুধু তাই নয় লাল-হলুদ সমর্থকদের একাংশ বলতে শুরু করেছেন, তাঁদের প্রিয় দলকে নাকি ন্যায্য পেনাল্টি থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ম্যাচের ২১ মিনিটের। তালালকে লক্ষ্য করে বক্সের মধ্যে একটা সুন্দর পাস বাড়িয়েছিলেন সাউল ক্রেসপো। বলটা নিয়ে ক্রেসপো তা বাড়িয়ে দেন বক্সের কর্নারে দাঁড়িয়ে থাকা দিয়ামান্তাকোসের দিকে। সেখানেই বল দখলের লড়াইয়ে দিমিকে বাজেভাবে ট্যাকল করেন মহমেডানের ডিফেন্ডারা। মাঠেই পড়ে যান দিয়ামান্তাকোস।
এরপর রেফারির কাছে পেনাল্টির আবেদন করেন। কিন্তু, সেই আবেদনে কার্যত সাড়াই দিলেন না। এমনকী, জিও সিনেমায় এই ম্যাচের ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার মেহতাব হোসেনও জানান, এই জায়গায় যদি রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিতেন, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকত না।
ম্যাচের ২৭ মিনিটের মাথায় বল দখলের লড়াই হয় ইস্টবেঙ্গলের নন্দকুমার ও মহমেডানের অমরজিতের মধ্যে। সেই সময় নন্দকুমার নিজের ডান হাত চালান। তাঁর হাত গিয়ে লাগে অমরজিতের মুখে। তিনি মাটিতে পড়ে যান। প্রথমে রেফারি হরিশ অমরজিতকে হলুদ কার্ড দেখান। মহমেডানের ফুটবলারেরা অভিযোগ করতে থাকেন যে নন্দকুমার অমরজিতকে মেরেছেন। পরে সহকারী রেফারির সঙ্গে কথা বলে ২৯ মিনিটের মাথায় নন্দকুমারকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।
রেফারির এই লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি মহেশ। তিনি রাগে বলে লাথি তাই মহেশকে হলুদ কার্ড দেখান তিনি। আগেই আরও একটি হলুদ কার্ড দেখেছিলেন মহেশ। ফলে তাঁকেও লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। ২৯ মিনিটেই দুই ফুটবলার মাঠ ছাড়েন।
আইএসএলে প্রথমবার মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান। আর সেই ম্যাচে ফুটবলের লড়াই ছাপিয়ে সঙ্গী রইল বিতর্ক। ৩০ মিনিটের মধ্যে জোড়া লাল কার্ড। কিন্তু পরের ৬০ মিনিটের বেশি লাল-হলুদকে ৯ জনে পেয়েও জয়ের দেখা পেল না মহামেডান। বরং অদম্য লড়াইয়ে আইএসএলের প্রথম পয়েন্ট আদায় করে নিল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গোলশূন্য ড্র’য়েই শেষ হল বিতর্কিত মিনি ডার্বি।
চলতি মরসুমে বার বার ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ সমালোচিত হয়েছে। ফিটনেসের অভাব, বোঝাপড়ার অভাব বার বার প্রকট হয়েছে। তবে আসল দিনে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা দেখিয়ে দিলেন, দরকার নিজেদের নিংড়ে দিয়ে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত তাঁরা লড়াই করতে পারেন।
কোনও দল যদি ৩০ মিনিটেই দেখে বিপক্ষে ন’জন হয়ে গিয়েছে, তারা বাকি ম্যাচে যে দাপট চালাবে সেটাই স্বাভাবিক। শনিবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল ঠিক সেই অবস্থাতেই পেয়েছিল মহমেডান। তবে যে দাপট তাদের থেকে প্রত্যাশা করা হয়েছিল তা দেখাতে পারেনি। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় মহমেডানের ফুটবলারদের পায়েই বলের দখল ছিল বেশি। ইস্টবেঙ্গলের সব ফুটবলারই রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। মাঝেমাঝে আক্রমণে উঠলেও মহমেডানের ফুটবলারেরা ঘিরে ফেলায় তা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে মহমেডানের ফুটবলারেরা যে ভাবে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে গেলেন তা চোখে লাগতে বাধ্য। বিরক্ত হয়ে প্রথমার্ধে আলেক্সিস গোমেজ়কে তুলেই নেন কোচ আন্দ্রেই চের্নিশভ। পরিবর্ত হিসাবে নামা সিজার মানজোকিও দাগ কাটতে পারেননি। ফুটবলারদের মান এবং মানসিকতা নিয়ে এ বার গুরুত্ব দিয়ে ভাবতেই হবে মহমেডানকে।