একশো বছর পর নয়াভাবে শুরু হচ্ছে রাজ্যের মৌজা ভিত্তিক মানচিত্র তৈরির কাজ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১০০ বছর বাদে নতুন করে গোটা রাজ্যের মৌজা ভিত্তিক মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। ১৯২৫ সালে শেষবার এই ম্যাপ তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকে রাজ্যের বহু এলাকায় জমির চরিত্র বদলে গিয়েছে। গ্রাম বদলে গিয়েছে আধুনিক শহরে। চাষের জমি বদলেছে শিল্পতালুকে। নতুন রাস্তাঘাট, এক্সপ্রেসওয়ে, রেললাইন ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। এ সব পরিবর্তন উল্লেখ করেই রাজ্যজুড়ে নতুন ম্যাপ বানানো হবে। জমির বর্তমান চরিত্র এবং কীভাবে তা ব্যবহার হচ্ছে, এই উদ্যোগ তা গুরুত্ব পাবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাজ্যের সব মৌজায় হাই রেজোলিউশন উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে এই ম্যাপ তৈরি করা হবে। ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য নেওয়া হবে। প্রতিটি মৌজা ধরে ভেরিফিকেশনও হবে। এই কাজ তত্ত্বাবধান করছে ‘ডিরেক্টরেট অফ ল্যান্ড রেকর্ডস অ্যান্ড সার্ভে’ বিভাগ।
কোনও মৌজা এলাকায় ৩২ শতাংশ বা তার বেশি পরিবর্তন হলে, সেখানে নতুন করে সমীক্ষা করতে হয়। যেমন, রাজারহাট, নিউ টাউন, বিধাননগরের বিরাট অংশ জুড়ে মাছের ভেড়ি ছিল। আজ সেখানে আধুনিক শহর। মালদা, মুর্শিদাবাদে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, দোকান, মন্দির, মসজিদ ও কৃষি জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। সেগুলি এখনও থেকে গিয়েছে মানচিত্রে। নতুন ম্যাপে এখনকার তথ্য উঠে আসবে, কোথায় বাসভূমি, কোথায় জলাভূমি, কোথায় স্কুল বা কলেজ, কোন কোন জায়গার উপর দিয়ে রেললাইন গিয়েছে; সব তথ্য সামনে আসবে।
ভেক্টর সার্ভেও করা হবে। রাজ্যের কোন কোন জায়গায় মশার বংশবৃদ্ধি ঘটছে, কোথায় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি ঘটে, তা জানা যাবে। এসব তথ্য জানা থাকলে মশাবাহিত রোগ মোকাবিলা সহজ হবে।
তিন ধাপে এই সমীক্ষা চালানো হবে জানা যাচ্ছে। প্রথম পর্বে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমানে সমীক্ষা হবে। দ্বিতীয় পর্বে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং তৃতীয় পর্বে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এবং মুর্শিদাবাদে ক্যাডাস্ট্রাল সমীক্ষা হবে। রাজ্যে এখন মোট মৌজার সংখ্যা ৪২ হাজার ৩০২টি। এক একটি মৌজার জন্য একাধিক মানচিত্র তৈরি হবে।