আধার প্রতারণায় জড়িতরাই কি ট্যাবকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। একাধিক জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলের পাশাপাশি কলকাতার একটি স্কুলেও পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা ঢুকেছে অন্য অ্যাকাউন্টে। সেই ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারির সংখ্যা যতই বাড়ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর-চোপড়া যোগসূত্র।
বছরখানেক আগেও রাজ্যে সাইবার প্রতারণার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে এই এলাকা। তখন চলছিল আধার প্রতারণা। আধার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত বায়োমেট্রিককে (আঙুলের ছাপ, রেটিনা) হাতিয়ার করে গ্রাহকের ব্যাঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরপর অভিযোগ ওঠে গোটা রাজ্যজুড়ে। আধার এনেবেল্ড পেমেন্ট সিস্টেম বা এইপিএস প্রতারণার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সরকারি পোর্টাল থেকে আম জনতার তথ্য চুরি রহস্য ফাঁস করে পুলিস। এবার কি সেই এইপিএস প্রতারণায় পরোক্ষভাবে জড়িতরাই ট্যাবকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড? এই সন্দেহই এখন কলকাতা ও রাজ্য পুলিসের গোয়েন্দাদের দুঁদে মস্তিষ্কে ঘোরাফেরা করছে।
এইপিএস প্রতারণার ক্ষেত্রে মূলত জমি বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের সরকারি পোর্টাল থেকে হাপিস হয়ে যাচ্ছিল গ্রাহকের আঙুলের ছাপ। সেই ছাপকে কাজে লাগিয়েই সেই গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সঞ্চিত অর্থ গায়েব করে দিচ্ছিল প্রতারকরা। এই কাণ্ডের তদন্তে চোপড়া ও ইসলামপুর থেকে প্রায় ২০ জনের বেশি অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছিল লালবাজার। রাজ্য পুলিসের গ্রেপ্তারির সংখ্যা আরও বেশি। তদন্তে উঠে আসে ভাড়ার অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছিল প্রতারিত অর্থ। ট্যাব কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তেও ‘কাঁটা’ সেই ভাড়ার অ্যাকাউন্ট। অভিযুক্তদের উৎসস্থলও সেই চোপড়া। তাহলে কি শিক্ষাদপ্তরের কোনও ‘মীরজাফর’এর পাশাপাশি নেপথ্যে কাজ করছে কোনও সাইবার গ্যাং? স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করে গোটা বিষয়টির তদন্তে নেমেছে লালবাজার। পৃথক তদন্ত চালাচ্ছে রাজ্য পুলিসও।
এইপিএস প্রতারণা কাণ্ডের সঙ্গে এই ট্যাব কেলেঙ্কারির কোনও যোগসাজশ রয়েছে কি না তা জানতে রাজ্যজুড়ে ধৃত ১১ জন অভিযুক্তের ফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট খতিয়ে দেখছে সাইবার পুলিস। শুধু তাই নয়, ফরেন্সিক আধিকারিকরাও তা পরীক্ষা করবেন। বছরখানেক আগে এইপিএস প্রতারণার সময় এই অভিযুক্তরা পরোক্ষভাবে তাতে জড়িত কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ। ধৃতদের বা তাঁদের কোনও আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের সাইবার অপরাধের রেকর্ড রয়েছে কি না তা পুলিসি নজরে। যদিও ভবানীভবনের দাবি, এখনও পর্যন্ত ধৃতদের পুরনো কোনও অপরাধের ইতিহাস পাওয়া যায়নি।