নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আসানসোলের নামী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে প্রথম সারিতেই হেঁটেছিলেন। এবার সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধেই নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। তিনি আসানসোলের নামী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রমন রাজ।
বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে তাঁর চেম্বারে গিয়েছিল নাবালিকা। সেখানেই যন্ত্রণায় কাতর অসহায় মেয়েটির উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত চিকিৎসককে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করেছে আসানসোল মহিলা থানার পুলিস। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই আসানসোলজুড়ে নিন্দার ঝড়। বিস্মিত আর জি কর আন্দোলনকারীদের একটা বড় অংশ। ‘জাস্টিস’-এর দাবিতে সরব হয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। ডেপুটি পুলিস কমিশনার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
শিল্পাঞ্চলে নামকরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের একজন রমন রাজ। আসানসোলের নামজাদা একটি বেসরকারি হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র চিকিৎসক। শহরে তাঁর একাধিক প্রাইভেট চেম্বার রয়েছে। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ-আন্দোলনের প্রথম সারিতেই ছিলেন তিনি। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান তুলে মিছিলে হেঁটেছেন। নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। সেই চিকিৎসকই কি না ধর্ষণে অভিযুক্ত—হতবাক আইএমএ-এর আসানসোল শাখার মুখপাত্র প্রভাসচন্দ্র মাজিও। তিনি বলেন, ‘রমন অত্যন্ত ভালো চিকিৎসক। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে চিকিৎসা করে আসছেন। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আমাদের যাবতীয় আন্দোলনেও অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর মতো মানুষের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ওঠা বিস্ময়কর!’
পুলিস সূত্রে খবর, বছর পনেরোর ওই নির্যাতিতা নাবালিকা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি হীরাপুর এলাকায়। কিছুদিন ধরে সে নার্ভ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিল। গত বৃহস্পতিবার বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করায় বাড়ির লোক তাকে নিয়ে যায় রমন রাজের চেম্বারে। শুক্রবারও নাবালিকার বুকে ফের তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। তাকে সঙ্গে নিয়ে আবারও চেম্বারে যান ঠাকুমা। অভিযোগ, সেই সময়েই ঠাকুমাকে বাইরে বসিয়ে রেখে নাবালিকাকে কিছু খাইয়ে যৌন নির্যাতন করা হয়। সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি তাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একটু সুস্থ হলে বাড়ির লোককে সবকিছু খুলে বলে ওই ছাত্রী। বুধবার আসানসোল মহিলা থানায় এসে চিকিৎসকের নামে অভিযোগ দায়ের করে তার পরিবার। রাতেই রমনবাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (২) (ই) ও ৬৪ (২) (এফ), ধর্ষণের দু’টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। দেওয়া হয়েছে পকসো আইনে ৬ নম্বর ধারাও। নাবালিকার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন পকসোর বিশেষ আদালতের বিচারক ছিলেন না। অভিযুক্তকে একদিনের পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলা বিচারক-২ তানিয়া ঘোষ। আদালত থেকে বের হওয়ার সময় রমন নীরবই ছিলেন।