হাতছাড়া মাদারিহাট, বিজেপি’র বিধায়ক সংখ্যা আরও কমল, হতাশা পদ্ম শিবিরে
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রজ্যের যে ছটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হল তার মধ্যে মাদারিহাট আসনটির দিকে নজর ছিল সকলের। বাকি পাঁচটি আসেন অর্থাৎ হাড়োয়া, নৈহাটি, সিতাই, মেদিনীপুর, তালড্যাংরায় তৃণমূলের জয় নিয়ে তাদের বিরোধীরাও সম্ভবত সন্দিহান ছিল না। তৃণমূল জয়ের ব্যবধান কতটা বাড়বে সে দিকেই নজর ছিল সকলের। কিন্তু মাদারিহাট সেদিক থেকে ছিল অনেকটাই আলাদা। ১৩ বছর তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলেও, উত্তরবঙ্গের এই আসনে কখনও জোড়াফুল ফোটেনি। ১৯৬৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বাম শরিক আরএসপি’র গড় ছিল মাদারিহাট। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে চা বাগান অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে বিজেপি জিতে আসছিল।
২০১৬ ও ২০২১- পরপর দুই বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির মনোজ টিগ্গা। চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার থেকে লড়েন তিনি। জয়ী হয়ে তিনি সাংসদ হওয়ায় মাদারিহাট বিধানসভা আসন ফাঁকা হয়ে যায়। সেই আসনে উপনির্বাচন হয়েছে৷
কিন্তু ভোট যন্ত্র খোলার পরই দেখা যায় এবার ফলাফল অন্যরকম হতে চলেছে। প্রথম থেকেই তৃণমূল প্রার্থী জয়প্রকাশ টপ্পো বিজেপি প্রার্থী রাহুল লোহার থেকে এগিয়ে ছিলেন। চূড়ান্ত জয়ের ঘোষণা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত মাদারিহাটে ২৮১৬৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের জয়প্রকাশ টোপ্পো। ৭৯১৮৬ ভোট পেয়েছেন তিনি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির রাহুল লোহার পেয়েছেন ৫১০১৮ ভোট।
মাদারিহাটে যেমন প্রথমবার জোড়াফুল ফোটাতে সক্ষম হল তৃণমূল কংগ্রেস তেমনি বিজেপি’র বিধায়ক সংখ্যা আরও কমে গেল। গত বিধানসভা ভোটে ২০০ পারের স্লোগান দিয়ে ৭৭-এ থেমে গিয়েছিল বিজেপির রথ। দলের বিধায়ক সংখ্যা ৭৪ থেকে কমে হয়ে গেল ৭০। তবে দলবদলের হিসাব ধরলে সেই সংখ্যাটা আরও কম। কারণ, গত তিন বছরে বিজেপির টিকিটে জেতা বেশ কয়েক জন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
দলের এই ব্যর্থতাকে দলের সাংগঠনিক অক্ষমতা’ হিসাবেই দেখছে বিজেপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে ভোটে লড়াই করার মতো সংগঠন বিজেপির নেই। এটা স্বীকার করতে আমাদের লজ্জা নেই। আমরা পারিনি সে ধরনের সংগঠন তৈরি করতে। জেতা আসনও আমরা ধরে রাখতে পারছি না। এটা আমাদের ব্যর্থতা।’’
আজকে ফল প্রকাশের পর নিজের দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা। তিনি বলেন “জেলা সভাপতি আর রাজ্য সভাপতির জন্য এটা হয়েছে। ওরা কারও সঙ্গে কথা বলে না। একা একা সিদ্ধান্ত নেয় না। দিল্লিতে বসে, কলকাতায় বসে ভোট করায়। আমাদের পাত্তা দেয় না। সংগঠনকে বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে এমনটাই হবে।”