কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলাবাদকের খুনি মনে করিয়ে দিচ্ছে দেশের কুখ্যাত কিছু ‘সিরিয়াল কিলারে’র নাম, যারা সকলকে চমকে দিয়েছিল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সিরিয়াল কিলার নিয়ে আমরা যতই পাশ্চাত্য সংস্কৃতির পুজো করি না কেন, বা ওদেশের থ্রিলার সিরিজ-সিনেমাকে প্রাধান্য দিই না কেন, স্বয়ং ভারতেই সিরিয়াল কিলারদের টক্কর যে কোনও দেশকে পেছনে ফেলতে সক্ষম। সম্প্রতি সেরকমই একটি ঘটনা সকলকে চমকে দিয়েছে।
১৯ নভেম্বর ডাউন কাটিহার এক্সপ্রেস হাওড়া স্টেশনে পৌঁছলে ট্রেনের প্রতিবন্ধী কামরায় বালির বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের দেহ মেলে। দেহে ছিল আঘাতের চিহ্ন। তদন্তে নেমে একাধিক সূত্র হাতড়াচ্ছিল রেলপুলিশ। তারপরই গুজরাতে ১৯ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ধরা পড়েন এক যুবক। হরিয়ানার রোহতক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক ধর্ষণ, লুটপাট, খুনের ঘটনার কথা সে স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ জানা যায়, গুজরাতের ওই কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন, কাটিহার এক্সপ্রেসে প্রবীণ তবলা বাদকে খুনের পাশাপাশি গত কয়েক মাসে আরও অন্তত তিনটি খুন করেছে ওই সিরিয়াল কিলার৷
গুজরাতের ওই কলেজ ছাত্রী ছাড়াও গত অক্টোবর মাসে পুণে থেকে কন্যাকুমারীগামী একটি ট্রেনের কামরায় আরও এক মহিলাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে খুন করে সে৷ আবার কাটিহার এক্সপ্রেসে হাওড়ার বাসিন্দা ওই তবলা বাদককে খুনের পর সেকেন্দরাবাদে মিনুগুরু এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের কামরার ভিতরে এক মহিলাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে৷ বেঙ্গালুরু থেকে মুর্দ্রেশ্বরগামী একটি ট্রেনের প্রতিবন্ধী কামরাতেও এক ব্যক্তিকে খুন করে সে৷ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই খুনের পর নিহতদের কাছে থাকা নগদ, মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য সামগ্রী লুঠ করত সে৷
গুজরাত পুলিশ সূত্রে খবর, তিরিশ বছরের এই সিরিয়াল কিলারের মানসিক বিকৃতি রয়েছে৷ ট্রেনে চড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত সে৷ ঘুমোত প্ল্যাটফর্মে৷ ট্রেনের মহিলা অথবা প্রতিবন্ধী কামরায় একা কাউকে পেলেই হামলা চালাত সে৷ খুনের পর মৃতদেহ চাদর চাপা দিয়ে ট্রেন থেকে নেম যেত সে৷ এ ভাবেই হাওড়ার বাসিন্দা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কেও খুন করে ওই সিরিয়াল কিলার৷
পুলিশ জানতে পেরেছে, এই রাহুলের অতীতে অপরাধের রেকর্ড রয়েছে৷ মূলত হাইওয়ের ধারে হোটেল বা ধাবার পাশে দাঁড়ানো ট্রাকে চুরি করত সে৷ গুজরাত, রাজস্থানের মতো রাজ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে৷ ২০১৮-১৯ সালে জেলেই ছিল সে৷
মজার বিষয় মাত্র আট বছর বয়সি, পৃথিবীর সবথেকে ছোট সিরিয়াল কিলারও কিন্তু এই দেশেরই। কেউ খুন করছে টাকার লোভে, কেউ বা মানসিক শান্তি নিতে আবার কেউ বা অন্য খুনির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় খুন করেছে একের পর এক, দেশের এরকম কিছু কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারের কথা শুনলে আত্মারাম খাঁচাছাড়া হতে বাধ্য। এদের মধ্যে অন্যতম চার্লস শোভরাজ, সায়ানাইড মোহন, অমরজিত সাদা, সায়ানাইড মল্লিকা (ভারতের প্রথম মহিলা হত্যাকারী), ঠগি বেহরাম, রমন রাঘব, স্টোনম্যান এবং সাইকো শঙ্কর।