করবেট জাতীয় উদ্যানে নজরদারির নামে অরণ্যবাসী মহিলাদের আপত্তিজনক ছবি তোলা হচ্ছে, বিস্ফোরক অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ক্যামেরা ও ড্রোনের অপব্যবহার চলছে করবেট জাতীয় উদ্যানে। গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে সেগুলি দিয়ে অরণ্যবাসী মহিলাদের ছবি তুলছেন কিছু ফরেস্ট রেঞ্জার। এমনকী আপত্তিজনক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে।
বিস্ফোরক এই অভিযোগ তোলা হয়েছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষদের তৈরি একটি সমীক্ষাপত্রে। বিষয়টি সামনে আসার পর তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। পাহাড়ি এই রাজ্যের মুখ্য বন্যপ্রাণ ওয়ার্ডেন রঞ্জন মিশ্র বলেন, এবিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন করবেটের ডিরেক্টর।
সমীক্ষাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং এফ জার্নালে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ২০১৯ সাল থেকে ১৪ মাস ধরে এই সমীক্ষা চালিয়েছেন। কথা বলেছেন করবেট টাইগার রিজার্ভের (সিটিআর) ভিতরে মহিলা সহ মোট ২৭০ জন গ্রামবাসীর সঙ্গে। কেমব্রিজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের গবেষক তথা সমীক্ষাপত্রটির প্রধান লেখক ত্রিশান্ত সিমলাই বলেন, ‘অরণ্যের মধ্যে এক মহিলা শৌচকার্যে যাচ্ছিলেন। ক্যামেরা ট্র্যাপের মাধ্যমে সেই মহিলার অর্ধনগ্ন ছবি তুলে তা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে হেনস্তা করতেই এসব করা হচ্ছে।’
শুধু গোপনীয়তা লঙ্ঘন বা হেনস্তা নয়, ক্যামেরা ট্র্যাপ ও ড্রোনের অপব্যবহার করে অরণ্যবাসী মহিলাদের সঙ্গে বনাঞ্চলের আত্মীক সম্পর্ক ও অধিকারও হরণ করা হচ্ছে বলে দাবি সমীক্ষকদের। সেই সঙ্গেই তাঁদের উপর হিংস্র পশুদের হামলার আশঙ্কাও বাড়ছে। ওই গবেষক জানাচ্ছেন, জঙ্গল থেকে জ্বালানি কাঠ, ঘাস ও মধু সংগ্রহ ওই অঞ্চলের মহিলাদের আইন স্বীকৃত অধিকারের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এক শ্রেণির ফরেস্ট রেঞ্জার ওই আদিবাসী মহিলাদের সামনে দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোন উড়িয়ে তাঁদের ভয় দেখাচ্ছেন। যাতে তাঁরা জঙ্গল থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে না পারেন। মহিলারা জঙ্গলে কাঠ, মধু ইত্যাদি সংগ্রহে গিয়ে নিজেদের মধ্যে জোরে জোরে কথা বলেন, গান করেন। এর ফলে বাঘ সহ হিংস্র জন্তুদের হামলার আশঙ্কা কমে। কিন্তু জঙ্গলে তাঁরা যখন ক্যামেরার মাধ্যমে তাঁদের উপর নজরদারি চলছে দেখেন, তখন ভয়ে চুপ করে যান। এর ফলে তাঁদের উপর জন্তুদের হামলার আশঙ্কাও বাড়ছে।