রাজ্যের পাওনা নিয়ে অর্থ কমিশনের বৈঠকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মঙ্গলবার নবান্নে অর্থ কমিশনের বৈঠকে ৪১ শতাংশ নয়, করের টাকা আধাআধি ভাগ চাই বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পাওনার দাবিতে সুর মেলাল বিরোধী সিপিএম এবং কংগ্রেসও।
বাংলায় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির রং গেরুয়ার বদলে নীল সাদা করা হয়েছিল। সামান্য এই কারণেই এরাজ্যে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। দেওয়া হয়নি প্রাপ্য কোটি কোটি টাকা। এটা অবশ্য একটা উদাহরণ মাত্র। বাংলাকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ছবি আরও ব্যাপক, আরও মর্মান্তিক। আর সেই ছবিই ষোড়শ অর্থ কমিশনের সদস্যদের সামনে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে রীতিমতো ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটালেন তিনি। বললেন, ‘বাংলা আর্থিক শৃঙ্খলা মেনে চলে। তা সত্ত্বেও এরাজ্যের ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। একাধিকবার কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েও কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। তাও মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বাংলার মানুষের হকের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এখন একটাই কর—জিএসটি। সেটা এখান থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ, ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে আবাস, সব বন্ধ করে দিচ্ছে। আপনাদের বলে দেওয়া রংই বাড়িতে করতে হবে! আপনাদের রং না মানলেই টাকা বন্ধ! এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। বিরোধী রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের অবিচার।’
মমতা যে বাক্যে ‘রং’য়ের ব্যবহার করে এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের। বিজেপির সঙ্গে তাল মেলালে উন্নয়ন, না হলে বঞ্চনা—এই ফর্মুলার বিরুদ্ধে লাগাতার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চলেছেন তিনি। এদিন তাঁর ঝড়ের মুখে পড়েছে ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল। তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলিকেও নিজের কোষাগার থেকে মোট খরচের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ টাকা খরচ করতে হয়। সেই ক্ষেত্রে রাজ্যের দেওয়া নাম বা লোগো ব্যবহার করলে কেন্দ্র কেন টাকা বন্ধ করে দিচ্ছে?’ বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনেও বাংলার প্রতি বঞ্চনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কমিশনের চেয়ারম্যানকে। উত্তরে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলির টাকা ছাড়ার বিষয়টি তাঁদের সঙ্গে সরাসরি জড়িত না হলেও, বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তোলা দাবি তাঁরা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের পর্যালোচনা খুব শিগগিরই প্রকাশ্যে আসবে।