কৃষকদের অভিযান আজ, গার্ডরেল-ব্যারিকেডের শহরে পরিণত হয়েছে ল্যুটিয়েন্স দিল্লি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সংসদের শীত অধিবেশন চলাকালীন ফের কৃষকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়ায় উত্তপ্ত হওয়ার মুখে রাজধানী। শুক্রবার দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। ফলে, আজ ফের চরম উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পাঞ্জাব-হরিয়ানার সীমানাগুলিতে। এর আগে পাঞ্জাব-হরিয়ানার উত্তাল কৃষক আন্দোলন নাড়িয়ে দিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন দ্বিতীয় এনডিএ সরকারকে। যে আন্দোলনের তীব্রতায় বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল মোদী সরকারকে। তাই এবার আগাম সতর্ক থাকতে চাইছে প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনওমতেই আন্দোলনকারীদের পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা পেরতে দেওয়া হবে না। আর কৃষক নেতা এস এস পান্ধেরের পাল্টা হুঁশিয়ারি, আশা করব, সরকার আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে। তাহলে আমরাও করব। নাহলে অন্য ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে কৃষকদের সঙ্গে পুলিস-প্রশাসন এবং বিজেপি সরকারের চরম সংঘাতের আশঙ্কা।
শুধুমাত্র পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানাই নয়। দিল্লিতে প্রবেশের যাবতীয় সীমানা এলাকায় কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। নাকা চেকিং চলছে। কারণ গোয়েন্দা ইনপুট রয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশ থেকেই বিক্ষোভকারী চাষিদের একটি বড় অংশ গাজিপুর সীমানা পেরিয়ে দিল্লিতে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে আজ, শুক্রবার। এরই পাশাপাশি দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু এবং তিক্রি সীমানাতেও কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কেমন ছিল দিল্লির নিরাপত্তা? ঠিক দু’পা দূরেই কেন্দ্রীয় সচিবালয় মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেট। ওই দু’পা আগেই সস্ত্রীক সমীর দ্বিবেদীকে আটকে দিলেন দিল্লি পুলিসকর্মী। দেখাতে হবে সচিত্র পরিচয়পত্র। নাহলে এই গেটে প্রবেশাধিকার মিলবে না। পাঁচ-সাত মিনিট হেঁটে রাস্তার উল্টোদিকে গিয়ে মেট্রো স্টেশনের অন্য গেটেই একমাত্র প্রবেশাধিকার মিলবে। পরিবহণ ভবনের সামনের রাস্তা। সংসদ মার্গ। পরিবহণ ভবনে একটি জরুরি ফাইল দিতে এসেছিলেন একজন সরকারি কর্মী। ভবনের অন্তত বেশ কয়েক পা আগে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল তাঁর গাড়ি। নির্দেশ, ছ’স্তরীয় ব্যারিকেড ডিঙিয়ে আর গাড়ি যাবে না। যতই জরুরি হোক, হেঁটে পরিবহণ ভবনে ঢুকতে হবে। ভিতরে রাষ্ট্রদূত না থাকলে ওই একই জায়গায় ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এমনকী দূতাবাসের গাড়িকেও। কেন্দ্রের মোদী জমানায় যেন গার্ডরেল-ব্যারিকেডের শহরে পরিণত হয়েছে ল্যুটিয়েন্স দিল্লি। রাতারাতি তৈরি করা হয়েছে একটি অভেদ্য দুর্গ। সেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ! বিশেষত সংসদের অধিবেশন চলাকালীন শহরজুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে নাভিঃশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। হচ্ছে চরম ভোগান্তিও।